বৃদ্ধ হৈমন্তিক
✍উজ্জ্বল সরদার আর্য
হে প্রিয়তমা! কতদিন পরে তুমি এলে-
হেমন্ত হাওয়ায় দুলে, এই রিক্ত পথে!
মলিন মুখে চেয়ে কি হবে আর
সময় হয়েছে বিদায় নেবার,
জানি-কেউ যাবে না সাথে।
তবু যেন মন আনন্দিত এখন
দেখে তোমায়,
শীতের প্রারম্ভে যৌবনের দম্ভ ভেঙে
তুমি ফিরে এলে পুরাতন ভালোবাসায়।
আজ কোথায় রাখবো তোমায়
ক্ষত-বিক্ষত অন্তর,
নয়নে ঘিরে আছে অন্ধকার -
হৃদয় এখন বৃদ্ধ হৈমন্তিক;
পাতা ঝরা পথে এসো না আমার সাথে
ফুল-ফল-সুগন্ধহীন রুক্ষ চারিদিক।
ওগো-তুমি এমন ক্ষণে কেন এলে?
অশ্রুজলে দিওনা বাঁধা আর!
ভিক্ষারী হয়ে চেয়েছি তোমারে
গিয়েছি দ্বারে লক্ষ বার।
সেদিন যদি গ্রহণ করতে ভালোবাসা
চলে যেতো প্রাণ-পিপাসা,
থাকতে হতনা পথে-পথে আমায়
দেখতে না এমন দুর্দশা।
আজ কুয়াশা ঘেরা চোখে পথ ভুলেছি
হারিয়েছি তোমার ঠিকানা,
আমিও এবার হারিয়ে যাবো
ওগো তোমায় আর বিরক্ত করবো না।
যদি পারো ক্ষমা করে দিও,
কোন এক বসন্তে ফিরে এলে
সেদিন চিনে নিও-
ডেকে নিও আমায়!
ওই নরম হাতটি ধরে হেটে যাবো বহু দূরে
রঙ ঝরানো রঙিন গোধূলি বেলায়।
আজ আমি একা বড়ো একা,
চাই নিঃসঙ্গ জীবনের অবসান!
ভালোবেসে কাছে এসে
কেউ যদি ফিরে যায়,
হারিয়ে যায়- বিশ্বাস তখন।
নিঃশ্বাস হয় অবরুদ্ধ হৃদয় দহন-দগ্ধ,
কম্পিত হয় অন্তর!
সাগরের বুকে লহরী ওঠে
ঘূর্ণিঝড়ে ভুবন যেন হয় চুরমার।
হে প্রিয়তমা! কি দিয়ে দেবো শান্তনা-
এই বেলাশেষে,
কথা দিলাম আবার আসবো ফিরে
তোমায় ভালোবেসে।
যদি ভালোবাসো বাঁচিয়ে রেখো প্রেম
আপন অন্তরে,
শয়নে-স্বপনে ছুঁয়ে যাবো তোমায়
অনন্ত রাতে বারে-বারে।
এখন অপেক্ষায়-আশায়-ভালোবাসায়
বেঁচে থাকা,
আমিও রেখেছি তোমারে অন্তরে
আছে অনন্ত দিনের স্মৃতি আঁকা।
অতীতের সেই নব যৌবনে
এসেছিলে আমার আমন্ত্রণে
হে-সপ্তর্ষি! তেজস্বী দেবী বেশে,
শিউলি ঝরিয়ে কাশফুল দলিয়ে
চলে গিয়েছিলে শারদ শেষে।
আজ যখনি এলে বেলা গেলো চলে
কাল সন্ধ্যা দাঁড়িয়ে-দুয়ারে,
ওগো-কেউ কারো নয় দাও বিদায়
প্রাণ দিয়ে স্বাগত জানাই তোমারে।
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল, ৭ নভেম্বর ২০২০ সাল,
বাংলা ২১ কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, শনিবার।
দাকোপ খুলনা,বাংলাদেশ।