এক জোনাকি ঘুমের ঘোরে
ভুলোমনে গান পাঠালো
সেই জোনাকির চোখের তারায়
হৃদয় পেলো মেঘের তুলো।
আঁধার ছেঁচে জোছনা নামে
দুঃখ রাতের রুদ্ধশ্বাসে
মন চুরিতে সেই জোনাকি
নাম লেখালো নীল আকাশে।
বিলীন হলো দুঃখ গুলো তার দু'চোখের নীল কোটরে,
রোজ বিকেলে রোদ ঘেষে তাই শালিক এসে জাপটে ধরে।
একমুঠো মেঘ রোদের শেষে আমার কাছে জলদি এসে,
ফাগুন ভরা প্রেম গুজে যায় তার দু'চোখে হৃদয় মেশে।
সেই মেয়েটির শাড়ির সুতোয়
বাসন্তী রঙ ছড়িয়ে পড়ে
সেই রঙেতে রঙীন হয়ে
আমার আমি হট্টগোলে।
মলিন রাতে ঘুম মাড়িয়ে অধীর আমি প্রতীক্ষাতে
সেই মেয়েটির হয়না কথা খুব বেশী আমার সাথে।
আমার আমি স্বপ্ন বোনে
সেই মেয়েটির চোখের মায়ায়।
স্বপ্ন বোনার বিকেল গড়ায়
পথ হারিয়ে গোধূলি বেলায়,
তার দু'চোখের সঙ্কোচে
সে সুখ গুঁজে দেয় আলগোছে।
আমার আমি অবশেষে
একশ রাতের দুঃখ মোছে।
চারিদিকে আজ আনন্দ গান, চোখে মুখে শুধু রঙের স্লোগান,
শহর সেজেছে বসন্ত রাগে কংক্রিট ঘেঁষে ঘেঁষে,
ভীষণ মধুর চাঁদের আলো
ঝলমলিয়ে গান শোনালো,
তার দু'চোখের তারায় আমি হারাই অনিমেষে।
নীলচে রঙের ডানায় মোড়া, লালচে রোদে মুখ আঁকি,
মন খারাপের ঝুম আঁধারে হঠাৎ সে এক 'লাল জোনাকি',
সুরের সাথে সন্ধিতে তার নাম দিয়েছি যত্নে ঠিকই,
সন্ধ্যাতারার চলাচলে নীল চাঁদোয়ার ঝিকিমিকি।
বেলীর ঘ্রাণ বা সেতারের সুর টানেনি এতটা কোনোদিনই
উপন্যাসের হৃদয় থেকে সে উঠে আসা এক সুহাসিনী।
অন্তহীন এই অন্তরালে অন্ধকারের কোলাহল,
সেই আঁধারের দীর্ঘঃশ্বাসে, প্রাচীন ব্যাকুল প্রতীক্ষাতে,
বেঁধেছি আমার গান যত,
একটা মেয়ে, এই শহরে লাল জোনাকির মত।
বৃত্ত এঁকে তার ভিতরে নাম লিখি তার খুব আদরে,
নদী-ফুল-পাখি-কুয়াশা মেখে আলো ছুঁয়ে আমি ঘুমকাতুরে,
ছুটছি শুধু ট্রেনের মত, কাঁচা হাতে এই কবিতা লেখা,
ঘুমজড়ানো ব্যস্ত ক্লাসে
কিংবা বিশাল ক্যাম্পাসে,
ক্যাফেটেরিয়ার ব্যস্ত ভীড়েও দাঁড়িয়ে থেকে একা একা।
বিষণ্ণ এই ক্লান্ত হৃদয় তার ভাবনায় ভবঘুরে,
সেই ভাবনা ঠিকানা গড়ে সেই মেয়েটির চোখের তারায়,
তাকিয়ে দেখি সুখ যত,
একটা মেয়ে, এই শহরে লাল জোনাকির মত।
বিকেল পেরোয় উদাস রোদে
কুয়াশাতে মেঘের কুসুম
লাল জোনাকির চোখের তারায়
বাঁধব ফুলের রঙ মৌসুম।
মেঘ করেছে ফুলের মত
সন্ধ্যা নামবে জানি
লাল জোনাকির জন্য
কিনেছি মেঘের ফুলদানি।
বিবর্ণ এই শূন্য শহর তার ছোঁয়াতে ফুল বাগান,
সেই ফুলেদের ঘ্রাণ ছড়াতে, ভীষণ মধুর অপেক্ষাতে,
শুকিয়ে আমার সব ক্ষত,
একটা মেয়ে, এই শহরে লাল জোনাকির মত।