*************আসরের কবিতা ও তার কাব্যিকতাঃ দুই***************
কবিতাঃ  সমুদ্রবেলা
কবিঃ কবীর হুমায়ূন
প্রকাশিত তারিখঃ ১৭/১০/২০১৭
-----------------------------------------------------------------------------------
কবির লিখিত কবিতাঃ
গহনকুসুম বাগে এলোচুলে দাঁড়াও প্রিয়তি-
এক অরূপ সুন্দরী; একাকার হয়ে যাও তুমি
ঝাউয়ের ঘনবনে; ধীরেধীরে অন্ধকার নামে
নীলাম্বরী অঙ্গদলে। মরুঝড়ে কবে খুঁজেছিলো
প্রেম লায়লা-মজনু- অমরার অনাবিল সুখ;
গ্রীষ্মের বৃষ্টির জল, সুশীতল সোহাগী পরাণে।
এখন মুগ্ধ নয়ন খুঁজে ফেরে তোমার বেসাতি-
মানুষের কামনা যা, মানুষীর প্রেম সৌষ্ঠবতা।

অন্ধকার কেটে গেলে বিস্ময়ের অনুভূতি জাগে!
ভুল পথে হেঁটে গেছে লালনের সুরের লহরী।
সুরভিত মৃত্তিকার হয়েছিলো অকালবোধন;
তাতেই জন্ম নিয়েছে কতশত বিলাসী গোলাপ।
সমুদ্রের জলরাশি কখনোই থাকে না যে স্থির;
তদ্রূপ, হৃদয় কাঁদে চিরকাল, সমুদ্রের মতো।
******শ্রদ্ধেয় কবির এই কবিতাটি বেশ সুন্দর। সমস্ত দিক বিচার করে বলা যায় কবিতাটি কাব্য রসে পরিপূর্ণ।
-----------------------------------------------------------------------------------
পর্ব ও মাত্রা বিভাজনঃ
গহনকুসুম বাগে /এলোচুলে দাঁড়াও প্রিয়তি- = (৮+১০)
এক অরূপ সুন্দরী; /একাকার হয়ে যাও তুমি = (৮+১০)
ঝাউয়ের ঘনবনে; /ধীরেধীরে অন্ধকার নামে = (৮+১০)
নীলাম্বরী অঙ্গদলে। /মরুঝড়ে কবে খুঁজেছিলো = (৮+১০)
প্রেম লায়লা-মজনু-/ অমরার অনাবিল সুখ; = (৮+১০)
গ্রীষ্মের বৃষ্টির জল, /সুশীতল সোহাগী পরাণে। = (৮+১০)
এখন মুগ্ধ নয়ন /খুঁজে ফেরে তোমার বেসাতি- = (৮+১০)
মানুষের কামনা যা, /মানুষীর প্রেম সৌষ্ঠবতা। = (৮+১০)

অন্ধকার কেটে গেলে /বিস্ময়ের অনুভূতি জাগে! = (৮+১০)
ভুল পথে হেঁটে গেছে /লালনের সুরের লহরী। = (৮+১০)
সুরভিত মৃত্তিকার /হয়েছিলো অকালবোধন; = (৮+১০)
তাতেই জন্ম নিয়েছে /কতশত বিলাসী গোলাপ। = (৮+১০)
সমুদ্রের জলরাশি /কখনোই থাকে না যে স্থির; = (৮+১০)
তদ্রূপ, হৃদয় কাঁদে /চিরকাল, সমুদ্রের মতো। = (৮+১০)
*** কবির এই কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে আছে। প্রবহমান পয়ারে লেখা অমিত্রাক্ষর কবিতা এটি।
-----------------------------------------------------------------------------------
ছন্দ বিশ্লেষণঃ
ছন্দ রীতি- অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
মাত্রা গণনার নিয়ম- মুক্ত দল ১  মাত্রা এবং রুদ্ধ দল কেবল মাত্র পদান্তে দুই মাত্রা, অন্যত্র ১ মাত্রা।
পর্ব- ৮, ১০ মাত্রায়
পঙক্তি- সমস্ত পঙক্তি সমমাত্রিক ও সমপার্বিক।
লয়- মধ্যম
বিশেষত্ব- চতুর্দশপদী কবিতা। অমিত্রাক্ষর ছন্দে।
-----------------------------------------------------------------------------------কবিতার অর্থ-
কবিতাটি রূপক ঘরানায় লেখা। এর মাঝে তিনি একটি অনবদ্য প্রেমের চিত্র নিপুণ হাতে এঁকেছেন। সমুদ্র সৈকতের সন্ধ্যাবেলায় প্রিয়তির সাথে তার প্রেম কাতরতা। অপরূপ সুন্দরীর বর্ণনায় এক আবেগ ঘন মুহূর্ত এর প্রতিটি পঙক্তিতে। নানা রূপক ও আলঙ্কারিক প্রয়োগে তিনি মূলত প্রেমের পূর্ণতা দিয়েছেন।
----------------------------------------------------------------------------------
কবিতা ও ভাব-
অনবদ্য।
-----------------------------------------------------------------------------------
অন্ত্যমিল-
নেই। কারণ কবিতাটি মিলহীন অর্থাৎ অমিত্রাক্ষর।
-------------------------------------------------------------------------------
ছেদ যতি-
আরও প্রয়োগ প্রয়োজন ছিল।
--------------------------------------------------------------------------------
অলঙ্কারঃ
বেশ!
-------------------------------------------------------------------------------------
বানান-
নীলাম্বরী > নীলাম্বরি
সোহাগী > সোহাগি
ছিলো > ছিল
পরাণ > পরান
লহরী > লহরি
------------------------------------------------------------------------------
অনুরোধ-
আপনার এ জাতীয় লেখায় আসর আগামীতে আরও সমৃদ্ধ হোক।
-----------------------------------------------------------------------------------
******কবি আমার শুভেচ্ছা নেবেন।