****************আসরের কবিতা ও তার কাব্যিকতাঃ ছয়***************
কবিতাঃ গাছের ছায়ায় ঘেরা
কবিঃ লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
প্রকাশিত তারিখঃ ১১/১০/২০১৭
-----------------------------------------------------------------------------------
কবির লিখিত কবিতাঃ
গাছের ছায়ায় ঘেরা ছোট মোর গ্রাম,
রাখাল বাজায় বাঁশি ভরে চিত্ত প্রাণ।
গাঁয়ের মাটিতে ফলে সোনার ফসল,
গাঁয়ের দিঘিতে ফোটে কুমুদ কমল।
গাঁয়ে আছে ছোটঘর ছোট ছোট পাখি,
প্রভাত সময়ে ওঠে কিচি মিচি ডাকি।
গাঁয়ের পথেতে রোজ চলে গোরুগাড়ি,
আম কাঁঠালের গাছ আছে সারি সারি।
অজয় নদীর ধারা, বয়ে চলে যায়,
তরী বেয়ে চলে মাঝি ভাটিয়ালি গায়।
নদী তটে আছে বসে ধবল বলাকা,
শঙ্খচিল চলে উড়ে মেলে দিয়ে পাখা।
গাছের ছায়ায় ঘেরা ছোট গ্রামখানি,
গাঁয়ের মাটিকে বড় ভালবাসি আমি।
******শ্রদ্ধেয় কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর এই কবিতাটি অতি সুন্দর, হৃদয়গ্রাহী ও কাব্যময়। প্রকৃতির সুন্দর ছন্দে ও কথায় কবিতাটি কাব্যরসে ভরপুর। নীচে কবিতার পর্ব ও মাত্রা বিভাজন করে দেখানো হল।
-----------------------------------------------------------------------------------
পর্ব ও মাত্রা বিভাজনঃ
গাছের ছায়ায় ঘেরা /ছোট মোর গ্রাম, =8+6
রাখাল বাজায় বাঁশি /ভরে চিত্ত প্রাণ।=8+6
গাঁয়ের মাটিতে ফলে /সোনার ফসল,=8+6
গাঁয়ের দিঘিতে ফোটে /কুমুদ কমল।=8+6
গাঁয়ে আছে ছোটঘর /ছোট ছোট পাখি,=8+6
প্রভাত সময়ে ওঠে /কিচি মিচি ডাকি।=8+6
গাঁয়ের পথেতে রোজ /চলে গোরুগাড়ি,=8+6
আম কাঁঠালের গাছ /আছে সারি সারি।=8+6
অজয় নদীর ধারা, /বয়ে চলে যায়,=8+6
তরী বেয়ে চলে মাঝি /ভাটিয়ালি গায়।=8+6
নদী তটে আছে বসে /ধবল বলাকা,=8+6
শঙ্খচিল চলে উড়ে /মেলে দিয়ে পাখা।=8+6
গাছের ছায়ায় ঘেরা /ছোট গ্রামখানি,=8+6
গাঁয়ের মাটিকে বড়/ ভালবাসি আমি।=8+6
*** কবির এই কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা। (৮+৬=১৪) মাত্রায়।
-----------------------------------------------------------------------------------
ছন্দ বিশ্লেষণঃ
ছন্দ রীতি- অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা
মাত্রা গণনার নিয়ম- মুক্ত দল ১ মাত্রা এবং রুদ্ধ দল প্রথমে ও মাঝে ১ মাত্রা এবং পরে ২ মাত্রা।
পর্ব- (৮+৬=১৪) মাত্রায়।
পঙক্তি- ১৪ টি। সমস্ত পঙক্তি সমমাত্রিক ও সমপার্বিক।
লয়- ধীর
বিশেষত্ব- অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা, পয়ার জাতীয় ছন্দে চতুর্দশপদী কবিতা।
কবিতার শ্রেণি- প্রকৃতিমূলক কবিতা।
-----------------------------------------------------------------------------------------------
কবিতার অর্থ-
কবির ছোটো গ্রামের এক অনুপম বর্ণনা এই কবিতায়। গাছের ছায়ায় ঘেরা আছে কবির ছোটো গ্রামখানি। রাখালের বাঁশি শুনে চিত্ত ব্যকুল হয়ে পড়ে।গাঁয়ের মাটিতে সোনার ফসল ফলে। গাঁয়ের দিঘিতে পদ্মফুল ফুটে আছে। গাঁয়ে অনেক ছোটো ছো্টো পাখি প্রভাত সময়ে উঠে কিচি মিচি ডাকে। গাঁয়ের সেখানে আছে গোরুগাড়ি, আম-কাঁঠালের গাছ। অপরদিকে অজয় নদীর ধারা বয়ে চলে, তরী বেয়ে মাঝি ভাটিয়ালি গান গায়। নদী তটে সাদা বক, শঙ্খচিল দল বেধে ওড়ে। এই সব কিছু আমাদের একটি গ্রাম্য জীবনের কথা মনে করায়। কবি এমন মমতা জড়ানো সুন্দর গ্রামটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন।
----------------------------------------------------------------------------------
কবিতা ও ভাব-
অনবদ্য।
-----------------------------------------------------------------------------------
অন্ত্যমিল-
আরও ভালো হতে হবে।
গ্রাম#প্রাণ, ফসল#কমল, পাখি#ডাকি, খানি#আমি, বলাকা#পাখা সঠিক অন্ত্যমিল নয়।
-------------------------------------------------------------------------------
ছেদ যতি-
ঠিক আছে। , ও । ছাড়া আরো কিছু আসতে পারত।
--------------------------------------------------------------------------------
অলঙ্কারঃ
বেশ!
-------------------------------------------------------------------------------------
বানান-
ছোট > ছোটো
বড় > বড়ো
বাকি ঠিক আছে।
------------------------------------------------------------------------------
অনুরোধ-
আপনার এ জাতীয় লেখায় আসর আগামীতে আরও সমৃদ্ধ হোক।
-----------------------------------------------------------------------------------
******কবি আমার শুভেচ্ছা নেবেন।