*************আসরের কবিতা ও তার কাব্যিকতাঃ ২৯***************
                                             ***** পদ্য কবিতা *****
কবিতাঃ  তুমি যে আমার প্রাণ...
কবিঃ রীনা বিশ্বাস (হাসি)
প্রকাশিত তারিখঃ ৩১/১০/২০১৭
***কবি ৭ মাস হল বাংলা-কবিতার আসরে আছেন। কবি আজ পর্যন্ত ২১৩টি কবিতা এই সাইটে লিখেছেন। কবি আসরে নিয়মিত লিখছেন।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবির লিখিত কবিতাঃ
জগতের নাথ তুমি হে সখা
আমার আরাধ্য ধন
অবলা অখলা যা বল আমারে
সয় সবই মন।

বন্ধু, তুমি যে আমার প্রাণনাথ
হৃদয় নিংড়ে বলি
তোমার পরশে আদেশে অনুরাগে
কঠিন পথটা চলি।

অকূল আঁধার এই ভব পারাবার
কোথায় তার শেষ!
তুমি যদি থাকো সাথে সাথে, হবে
সব পরিতাপ নিঃশেষ।

দেশে সমাজে ভুলোকে দ্যুলোকে আর
আপন কাকে ভাবি!
তুমিই আমার দেবতা হে চির সখা
জীবন মরণ সবই।
****** কবির এই কবিতাটির বিষয় খুব সুন্দর ও কাব্যময়। কবি চণ্ডী দাসের বৈষ্ণব পদাবলী অবলম্বনে কবিতাটি রচনা করেছেন। কবিতাটির কাব্যভাবনা যথার্থ। কবিতাটি পাঠকের অনেক ভালোলাগা ও ভালোবাসায় পূর্ণ। কবিতায় কাব্যিকতার  প্রকাশ মেলে। কবির এই কবিতাটি পদ্যরূপে  লেখা।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবিতাটিকে প্রথমে স্বরবৃত্ত ছন্দে দেখানো হল।

জগতের নাথ /তুমিই সখা
মোর আরাধ্য /ধন
অবলা মুই/ এই আমাতে
সব মাঝেতে/ মন।

তুমি যে মোর / ও প্রাণনাথ
হৃদয় নিংড়ে /বলি
তোমার স্পর্শে /এ আদেশে
কঠিন পথটা /চলি।

অকূল আঁধার /এই  পারাবার
কোথায় যে তার/ শেষ!
তুমি  থেকো /সাথে সাথে
সব পরিতাপ /নিঃশেষ।

দেশ সমাজে / ভূ-লোকে  আর
আপন কাকে /ভাবি!
হে  দেবতা / চির সখা
জীবন মরণ /সবই।
    -------
    --------
কবিতাটিকে এবার  মাত্রাবৃত্ত ছন্দে দেখানো হল।

জগতের নাথ /তুমি প্রিয় সখা
মোর আরাধ্য /ধন
অবলা অখলা /যা বল আমারে
সয়েছে সবই /মন।

বন্ধু, তুমি যে /মোর প্রাণনাথ
হৃদয় নিংড়ে /বলি
তোমার পরশে /মন অনুরাগে
কঠিন পথটা /চলি।

অকূল আঁধার / ভব পারাবার
কোথায় যে তার /শেষ!
তুমি যদি থাকো / মোর সাথে সাথে,
পরিতাপ নিঃ/শেষ।

দেশে ও সমাজে /ভু-লোকে দ্যুলোকে
আপন কাকে যে /ভাবি!
আমার দেবতা /তুমি চিরসখা
জীবন মরণ /সবই।

*** কবির এই কবিতাটি নিদিষ্ট ছন্দে না থাকায় দু'ভাবে করে দেখানো হল।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার শ্রেণি-  
বিরহের  কবিতা।
----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার নামকরণ—
কবিতার বিষয়ের সাথে নামকরণ যথার্থ। 'তুমি' এখানে ঈশ্বরের প্রতিভূ।                                                                                                                                                                                                                              
----------------------------------------------------------------------------------

কবিতার অর্থ-
কবিতাটি চণ্ডী দাসের বৈষ্ণব পদাবলি অবলম্বনে রচিত।  কবি জগতের নাথকে জীবনের সখা ও আরাধ্য ধন বলে উল্লেখ করেছেন। অবলা, অখলা যা নামে কবিকে ডাকা হোক না কেন, তিনি তবু নিজের মনের মতো করে প্রভুকে ভালোবেসে যাবেন। কবি হৃদয় নিংড়ে বলেন- প্রভু তার কাছে বন্ধু, তিনি যে তার প্রাণনাথ। তিনি প্রভুর পরশে আদেশে অনুরাগে সদা কঠিন পথটা চলেন। অকূল আঁধার, এই ভব পারাবারের কোনো শেষ নেই। প্রভু যদি  সাথে থাকেন তবে সব পরিতাপ নিঃশেষ হয়ে যায়। দেশে সমাজে ভুলোকে দ্যুলোকে কেউ আপন নন কবির কাছে। শুধু প্রভু তার দেবতা , চিরসখা ও জীবন মরণ তাতেই নিবেদিত।
----------------------------------------------------------------------------------
কবিতা ও ভাব-
একদম ঠিক আছে।
----------------------------------------------------------------------------------
ভাষা প্রয়োগ-
অনেক ভালো।
-----------------------------------------------------------------------------------
অন্ত্যমিল-
ভালো। আরও প্রয়োজন ছিল।
-------------------------------------------------------------------------------
ছেদ যতি-
খুব ভালো। আরও প্রয়োগ দরকার।
--------------------------------------------------------------------------------
অলঙ্কারঃ
যথার্থ। শব্দালঙ্কারে ভালো প্রয়োগ আছে।
-------------------------------------------------------------------------------------
বানান-
ঠিক আছে।
------------------------------------------------------------------------------
অনুরোধ-
আপনার এ জাতীয় লেখায় আসর আগামীতে আরও সমৃদ্ধ হবে আশা করি।
-----------------------------------------------------------------------------------
******কবি আমার শুভেচ্ছা নেবেন। ভালো থাকুন।