ছন্দ ও কবিতার পাঠ –<পর্ব-৯, ভাগ-৮৯> – কবিতার বিষয়শ্রেণি
---ড. সুজিতকুমার বিশ্বাস
-------------------------------------------------------------------------------
আজকের পাঠ – জীবনমুখী কবিতা
------------------------------------------------------------------------------
আজকের পাঠ উৎসর্গ করা হল - আসরের প্রিয়কবি মো আনোয়ার সাদাত পাটোয়ারী মহাশয়কে।
------------------------------------------------------------------------------
জীবনমুখী কবিতা
কবিতার নানা বিষয়ের মধ্যে জীবনমুখী কবিতা এখন একটি পরিচয়। আগে কখনো এ নামে কবিতার ভাগ করা হয়নি। কয়েক দশক আগে এই জীবনমুখী শব্দের অভ্যুত্থান হয়। যে কবিতায় জীবনের দিক ফুটে ওঠে, জীবনকে আরও বিকশিত করার এক উপায় মাত্র। জীবনের প্রেরণামূলক কবিতাই জীবনমুখী কবিতা। কবিকূল নানা রূপকের সাহায্যে এই ধরনের কবিতা লিখে থাকেন। এর মূল ভাবনা জীবনমুখী কেন্দ্রিক। নীচে আমাদের আসরের কিছু কবিতা তুলে দেওয়া হল।
১) জঙ্গম – সঞ্চারিণী
আমার অনুরাগে সুরেলা সুর ছিলো প্রথম ভাগে,
তাই তুমি অবহেলা অপ্রেমে ডুবিয়ে দিতে পারোনি।
ঠিক সময়ে তীরে ভিড়েছি। মাস্তুলের পাল খুলে-
হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছি- কষ্ট,চোখের জলকে মিলিয়ে দিয়েছি-সমুদ্র ও মেঘে। সেই থেকে দুঃখ হলো দূর-
মায়ায় জড়িয়ে,রুপকথার গল্পে ভুলিয়ে,
সদা আনন্দে থেকে- নির্মেঘে।
২) কে কার – চিত্তরঞ্জন সরকার
গ্রামের গোধূলি বেলায়,
ম্লান আলো অস্তবেলায়,
আমি বসে দিগন্তজোড়া খোলা আকাশ তলে
প্রভাত থেকে দুপুর হয়ে
বুঝি সন্ধ্যা আসিল নেমে
জীবনের হাসিখুশি একে একে যাবে চলে।।
আঁধারে ঘিরিবে সব
থেমে যাবে জীবনের কলরব
দিনো ষেশে একা একা ফিরিব যে ঘরে।
নীরব নিথর হবে,
চারিদিকে পড়ে রবে আমার স্মৃতি সম্ভার,
তখনই বুঝবে সবাই এ জীবনে কে কার।
৩) কলম তুলি – যাদব চৌধুরী
নিজের ছবি নিজের ছড়া
বাঁধন ভেঙে লাগামছাড়া
কলম তুলির যুগলবন্দী
দেখছে সবাই কান্ড ।
ছন্দ কথায় অনু ব্যথায়
ভাব ভাবনা রোমান্স ছোঁয়ায়
একের পর এক খুলে চলেন
অরূপ ছড়ার ভান্ড ।
৪) কিছুক্ষণ জ্যোৎস্না মাখি – গৌরাঙ্গসুন্দর পাত্র
উদ্বেলিত উচ্ছ্বসিত উন্মোচিত হৃদয়খানি
রেখে দিয়ে সংগোপনে
এতদিন তো হৃদয় দিয়ে
হৃদয়গুলি ঠকিয়ে গেলাম
কিছুই নয় পথের ধারে
কাঁটাঝোপ আর নুড়িপাথর কুড়িয়ে পেলাম ।
এবার নাহয় যন্ত্রণাকে আঁকড়ে ধরে
কিছুক্ষণ জ্যোৎস্না মাখি ।
তুমি বললে সহবাস আর দেহের কথা
কল্পনা নয় বাস্তবতা
ঠকের রাজ্যে সবই তো ফাঁকি ।
আমি তবু শয্যা থেকে উঠে
যাচ্ছি চলে
পথ হারাবো বলে
বলে গেলাম দেবার কিছু রইলো কী আর বাকি?
এবার না হয় কিছুক্ষণ জ্যোৎস্না মাখি ।
৫) কর্মময় জীবন – অজিত কুমার কর
প্রভাত হলেই কর্মযজ্ঞ শুরু
অনেকের কাজ বাঁধাধরা কারো বা তা ভেবে করা
শিক্ষার্থীদের সম্মুখে রয় গুরু।
সারা জীবন চলতে থাকে অলক্ষ্যে কেউ হিসেব রাখে
ব্যর্থতা বা সাফল্য লাভ
ওটা ভেবেই বুকটা দুরুদুরু।
কর্ম শুরু জন্মানোর পর থেকে
খেলাধুলা লেখাপড়া নতুন কিছু জিনিস গড়া
শিক্ষানবিশ মন দিয়ে সব শেখে।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে কুশলতার মালা গাঁথে
কর্মযজ্ঞে সফল যারা
কেবল তারাই জীবনযুদ্ধে টেকে।
**সংযোজিত হবে।
***আজ এই পর্যন্ত। তবে চলবে।
------------------------------------------------------------------------------
সূত্র/ ঋণস্বীকার- ১) বাংলা কবিতার আসর
২) ইন্টারনেট।
----------------------------------------------------------------------------
আসরের কবিদের কাছে আমার অনুরোধঃ এই আলোচিত পর্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নীচে সযত্নে উল্লেখ করবেন। তাছাড়া কোনো গঠনমূলক মতামত থাকলে আন্তরিকভাবে জানাবেন।