মহানগরের ফুটপাত জুড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে
খিদে পেটে ধুলো মাখা ছোট ছোট শরীর,
ট্রাম লাইনের ধারে বাটি হাতে বসা শৈশব
দিন শেষে পলিব্যাগ হাতে ডেনড্রাইট
চল্লিশতলা হাই রাইসের নিচে রাত নামে
দরদাম করে খদ্দের ধরে দেহের ব্যাপারী,
হলুদ ট্যাক্সি আর ঘুষখোর কে.পি সুখে সংসার
মধ্যরাতে ক্লান্ত শহরে সাক্ষী ত্রিফলা লাইট
পাকস্ট্রিটে লাল চোখে একদল ছেলে
কি যেন খুঁজছে ঘুরে ঘুরে সারারাত ধরে,
ওরা ভোর হলে ঘরে ফেরে তবু
একলা মেয়েটা কালও ফিরবে একই রাস্তায়
সাদা ভিক্টোরিয়াটা চিরসবুজ করে রাখে
জোড়া জোড়া কচি মন ছাতার আড়ালে,
স্টেশনের প্লাটফর্ম জুরে মুটে দৌড়ায় রোজ
পিঠে নিয়ে পাপ আর কিছু চেনা ইতিহাস বস্তায়
খোলা ময়দান জোরা আকাশটা ঘন কালো
কালো সভ্যতার কার্বন হাইড্রেন হয়ে গঙ্গায় মেশে,
শিশুর ঘুড়িটা নীল নীলিমা খুঁজে ক্লান্ত বিকেলে
শেষমেশ গেলে রেস্তোরা এসে ভাগাড়ের বিষ
বস্তির মেয়ে ব্ল্যাকমেল আর স্ক্যান্ডালে ভয় তাই
রোজ জামা খোলে চুপিসারে প্রেমিকের হাতে,
ঝুপড়ির ঘরে টেনেটুনে চলা দশটা পেটের দায়
তাই পার্কিং হয় গলির মুখে ক্ষুধিত মার্সিডিস
তিলোত্তমা সাজে লাল নীল-সাদা গেরুয়ার রঙে
বেকারত্বের জ্বালা রাস্তার নলকূপে তৃষ্ণা জানায়
বুদ্ধিজীবীর দল প্রায় মোমবাতি কেনে দোকানে
সুমন-অঞ্জন আজও জীবনমুখীর গান শোনায়
আমরাও বাঁচি খুশি মনে পাশ ফেরা খাটে আর
মধ্যবিত্ত হাঁটে বাজারের ব্যাগে চ্যাপটা সমাজ
কলকাতা থাকে সেই কলকাতাতেই তবু
সুবোধ কবির কলম তৃতীয় বিশ্ব আঁকে আজ !