এইতো সেদিন ,
তাহারে গৃহে আনিলাম,
চলিল নববধূবরণ,
কি মিষ্টি তাহার কন্ঠ !
স্নিগ্ধ তাহার আঁখি ।
ভীত সে বধূ
চরণসেবা করিতে আসিয়া
সংস্কার পালিতে চাহিত,
এসব দৃশ্য দেখিয়া
সেদিন মনে প্রশ্ন জাগিল,
“গৃহমন্দিরের দেবী যে ,
চরণতলে স্থান দিয়া
তারে কি শেকলে বাঁধা সাজে ?”
সেদিন হইতে নিজ ঘরে
তাঁহার অস্তিত্বে অভ্যস্ত এ আমি ,
আমিত্ব ভুলি দুজনার নামে
সাজাইলাম গৃহখানি ।
মান-অভিমানের কাঁটায় বাঁধা
সংঘাতের এই জমিন ,
কর্ষণ করিয়া রোপন করি
ভালোবাসার বীজখানি ।
সাফল্য সুখে বহুদূর
যদিও চলিয়া যাই একা ,
তবুও সংগ্রামকালে আজ অবধি
কারবালাতে তাহারই পাই দেখা ।
সত্যিই বড় মিষ্টি এ বিবাহ বন্ধন খেলা !
এতবছর পার করিয়া আজ
নিথর দেহখানি ; আমার সেবায়
রাত্রি দিন কাটায় ঐ বৃদ্ধা নারী ।
আজও চক্ষু আড়াল হইলে তাঁহার
উৎকন্ঠার স্রোত বহে ,
স্রোত আসিয়া ভাঙন ঘটায়
অভিমানের ঝরণা ঝরে ,
শব্দ তাহার মৌন থাকে
স্বভাবে তখন তারে নববধূর মতন লাগে ।
আজ চুলে পাক ধরিছে
কন্ঠ গেছে রুধি ,
লাবন্যতার খরা যদিও ,
তবুও হাতে হাত রয়েছি ধরি ।
একই গন্ধ ;একই স্পর্শ;
একই স্বপ্নের খেলাঘর ,
দিন ফুরালেও ;
দুজনে দুজনার চোখে
হইনি তো মোরা পর ।
মন বোঝা বড়ই কষ্ট
তাই চেষ্টা করিনি কভু ,
দীর্ঘকাল পার হয়ে আজ বুঝিলাম ;
সে স্বভাবে বড্ড বেশি ঋজু ।
পঞ্চাশ বৎসর ধরিয়া যেহেতু
মোর প্রিয়া রহিলে,
হাজার বৎসর পরেও
আমারই হাত কি ধরিবে?
সে জনমেও জানিও
তোমার মিষ্টি মধুর রাগ ,
আমি কাব্য খাতায় লিখিয়া যাইব
তুমিই আমার শেষ বয়সের অনুরাগ ।