দক্ষিণা সমীরে; শিহরিয়া উঠি যবে ,
শিমুলের ঘ্রাণে;কুয়াশার স্নানে
শিশির ভেজা দূর্বাদি তৃণ উপেক্ষা করিয়া
সুদূরে চলনকালে ,
হঠাৎ এক অচেনা কন্ঠ শুধায় মোরে
“ওহে বালিকে , কোথা চলিছো তুমি?
কিসের সন্ধানে ?”
তাকিয়ে দেখি , মনে হয় চিনি ওহারে ।
কহিলাম -“পার্শ্ব গ্রামে মেলা বসিছে,
আশ্রয় সেথায় বৃক্ষ বনস্পতি ,
সখীরা সব আয়োজনে মাতয়ারা
এই তো শুরু হলো বলে চড়ুইভাতি ।
যাবে নাকি দেখিতে মোদের রান্নাবাটি ?”
“যাব ,তবে শর্ত আছে কতক,
মানিবে নাকি বলিলে বাঁচি,
সাক্ষী কিন্তু সকল তারকারাজি ।”
আমি অদ্ভুত নয়নে চাহিয়া থাকি ,
উৎসুক বেহায়া মন ,গোপনে রচে
রাজপুত্রের মুখখানি ।
বলিলাম -“তবে শীঘ্র কও
যা আছে শর্তখানি ,
বেলা পরিয়া গেলে হায়
আমার শাস্তি কিন্তু তোমারই দায় ।”
“আচ্ছা বাপু , জান কি তুমি মেয়ে
তোমার কথায় আমি হই কেমন কাবু ?
বেশ থাক তবে , অনেক তো হইল রসিকতা ,
শুনিতে পারতেছো কি তুমি ?
সেকি! পাচ্ছ না ?
ঐ যে বাজিছে অনুরাগের বেণু ,
ঐ তো ; দিকে দিকে ছুটিতেছে পুষ্প রেণু ।
আমার চিত্তে , অলীক পটচিত্রে
আছে একটি কামধেনু ,
করিবে সে ইচ্ছেপূরণ ,
বলিছে যে তুমি হবে একান্তে আমার আপন ।
এই দেখো তুমি আজ আমার কত নিকটে ।”
হঠাৎ ক্রন্দন শুনিয়া হর্ষিত হইলাম,
বুঝিলাম স্বপ্ন ছিল সব ভোরের ,
যা হোক , তারে নিয়ে অন্তত ঘর তো বাঁধিলাম।
খুলিয়া দুয়ার ; দেখি চারিদিক তোলপাড়,
খবর পাইলাম ; শক্ত হইলাম ,
বাল্যপ্রেমের স্বপ্ন সাঙ্গ করিলাম।
মন কহিল -“ আফসোস কিসের ?
অপূর্ণ অবুঝ এ প্রেম ,
চিরকাল হৃদপ্রাঙ্গনে সেই বনস্পতি তলে ,
চড়ুইভাতির প্রাক্কালে রোজই হইবে সমাদরে লালিত , যদিও বা হয় আমার হিমাদ্রী মৃত ।”