সময়ের স্রোতে তুমি স্বার্থত্যাগী
জীবনসংগ্রামে সর্বদা সংযমী,
তুমি পরমার্থে প্রস্তুত রমনী ,
তুমি বাঁচ প্রতিদিন রুদ্ধশ্বাসে,
যেন ভয় চিরসঙ্গিনী।
তুমি ছিলে মাতার নয়নের কাজল ,
আজ সন্তানের স্নেহের আঁচল ,
ছিলে পিতার চোখের মণি ,
স্বামীর সংসারে লড়ে আজ
হয়েছো ভীষণ দামী ।

তোমার কোন পরিচয় নেই ,
তুমি তো অপরিচিতা ,
তুমি অজেয় তবুও
অন্তরে তোমার জ্বলে
প্রতিশোধের লেলিহান শিখা ।
বয়সের ভারে সৌন্দর্য় কমে
রোগ-শোক সব বাসা বাঁধে ,
তবুও মন ডানা মেলে আর
শৈশব স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।

আবার ইচ্ছে জাগে ,
গোপনে তোমায় তারুণ্য ডাকে,
বয়স যদিও বাঁধ সাধে
তবুও তোমার অন্তরাত্মা আবার প্রেমে পরে ।
বৃদ্ধ হবার কলির সন্ধ্যা
হারিয়ে ফেলা ;আর জাগায় না শঙ্কা ,
পরের কাঁধে ভরসা খোঁজা
তোমার কাছে আজ নিছক রসিকতা ।

অভিমান-অভিযোগে পার করেছো দিন
এখনো তো মনটা রঙিন ,
বয়স যখন তোমার বিশ
গহণা পড়লে করতো লোকে কুর্নিশ,
আজ তোমার সবেতেই বারণ ,
কারণ;
এ সমাজের রক্তে লালিত হয়
কুসংস্কারের বিশ ।
আজ সংসার বাঁধন ছিড়ে
হারাতে চাও আকাঙ্খিত স্বপ্নের ভীড়ে,
আরশি নগরের বুক চিরে; দেখো ,
আলতা পায়ে তোমার নুপুর ঝুমে ,
আটকা পরে গেছো তুমি
না জানি কিসের ধুম্রজালে !

তুমি চিরদিনই বেশধারী
সংসারের নানা আয়োজনে ,
অস্তিত্বের বিসর্জন যখনই দিলে
উপাধি পেয়েছ বিরঙ্গনা নারীর ।
আজ সবকিছু পেছনে ফেলে
হতাশাকে দূরে রেখে,
একবার ভেবে দেখ ,
আর প্রতিবাদ করে বলো-

“অনেক স্বার্থের বিসর্জনেই তৈরী হয় একেকজন ক্ষতবিক্ষত চল্লিশের নারী ।”