বলি যদি রোজ সন্ধ্যায় ,
অপেক্ষমান স্বরলিপিগুলো
থাকে শিল্পির প্রতিক্ষায় ,
শিল্পি যে আর আসে না ,
গান ধরার অনুমতিও দেয় না ,
ব্যথিত মনে এ ভুবনে
এরূপেই বসে থাকি ,
দ্বারপাল সংবাদ দেয় মোরে,
“শিল্পি নাকি এসে গেছে”
কই ? তার দেখা পাই না কেন তবে!
কবে আসবে সে ?
গানে গানে বাঁধবে বেদনা বিধুর স্মৃতি ।
শিল্পি কত কতই তো গান বাঁধে ;
তবুও কি তার মন অতৃপ্ত আত্মার মতো
কাওকে খুঁজে ফিরে !
সন্ধ্যে বেলা পূর্ণমা দেখি
প্রহরের পর প্রহর গুণি ,
নকশি শাড়ির আঁচল সামলে
আঁখিযুগলের অশ্রু মুছি।
এভাবেই বছর কাটে , দিন কাটে ,
মনের মধ্যে কেবল সেই
শিল্পিরই কন্ঠ বাজে ।
যাকে দেখি নি কখনো
তার প্রতি এতো শ্রদ্ধা কেনো আসে?
আমি কবি ,
সখে গান লিখি ,
আমার গানে সুর দেওয়ার
সেই সুরকারকে আজও দেখিনি ;
তবে তার বিশ্বজয়ের কাহিনী শুনেছি,
শুনেছি সে নাকি বংশীবাদক ;
তার বাজানো বাঁশির ঐ সুর ; শুনিনি,
তবে তার বাঁশির সুর শুনার জন্য
যে বিরহ তা উপলব্ধি করেছি।
আমি আমার মনের গহীনে
তার যুবক রূপের চিত্র এঁকেছি ।
আমি তাকে প্রেমিক বেশে দেখিনি
তবে তার ঐ রূপের প্রেমে পড়েছি ,
আমি তাকে আজও জানতে পারিনি
তথাপি তাকে জানার জন্য
মনের তৃষ্ণা সর্বদা অনুভব করছি ।
আমার কোন সুবিশাল সাম্রাজ্য নেই ,
আছে তার জন্য অপেক্ষমান
আমার সাধের বিদর্ভ নগরী।
মালা গাঁথতে না জানলেও ,
তার জন্যই যে বরমালা গাঁথার স্বপ্ন বেঁধেছি ।
গোধূলি লগ্নে , সমুদ্র তীরে
বসে যখন এসব লিখছি আনমনে ,
সমুদ্র জোয়ারে শাড়ির কুচি
যখন টলমলে,
হঠাৎ দেখি এক যুবক
সেই কুচিকে সাজাতে ব্যস্ত ,
প্রশ্ন করল ,” ভালোবাস?”
চমকে গেলাম ; এ তো সেই,
সেই চেনা কন্ঠ ,
কিছু না ভেবেই বললাম ,”বাসি।”
সে অবাক দৃষ্টিতে ঊর্ধপানে চেয়ে বলে,
“ এভাবেও কি ভালোবাসা যায় সখি !”