আমি নিজেকে প্রতিনিয়ত গিলে খাই,
অজান্তেই রূপান্তরিত হই এক বিকৃত ছায়ায়।
রক্ত লাল শিরাগুলো বিষে ভরে উঠছে,
দীর্ঘশ্বাসগুলো যেন ধারালো তীক্ষ্ণতা নিয়ে প্রবেশ করছে ফুসফুসে।
শিরদাঁড়ার মাঝে জমতে থাকা রাগ,
চোয়ালের কোণে লুকানো ক্রোধের কামড়,
আমার মানবতা নিঃশেষ করছে— একটু একটু করে।

আমার আয়নায় এখন শুধু বিকৃতির প্রতিফলন,
শিরদাঁড়া ভেঙে যাচ্ছে আমারই আঘাতে, অথচ আমি অনুভূতিহীন,
আমার হৃদয় যেন ধাতব লৌহের বর্ণ,
আঘাতে আঘাতে আরো তীক্ষ্ণ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত,

আমার রক্তের প্রতি প্রবাহে এখন লুকানো বিষাক্ততা।
আমি এখন সেই অন্ধকার কাহিনির চরিত্র,
যার প্রতি পলকে মৃত্যুপ্রহরীর পদধ্বনি শোনা যায়।
আমার অস্তিত্বে চলছে এক অপার্থিব যুদ্ধ,
আর আমার চোখগুলো শুকিয়ে যায় ক্রমাগত শূন্যতায়,
আমার কণ্ঠস্বর খুনির মতো ভয়ানক স্বরে ফিসফিস করে।
স্বপ্নগুলো এখন পরিণত হয়েছে বাস্তবতার কঙ্কালে,
হাড়ের নিচে জমে থাকা বিদ্বেষ আমার সত্তাকে কাঁপিয়ে তোলে।

আমি এখন এক অবিনশ্বর তৃষ্ণা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি—
সময় নদীর তীরে,  আর পৃথিবী যেন শুষে নিচ্ছে আমার জীবনীশক্তি,
তবুও আমি বেঁচে আছি, এক জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে।
আমার সত্তা এখন কুৎসিত, তবুও আমি ছুটছি,
কোথাও বিশ্রাম নেই, শুধু পতনের প্রতীক্ষা।

আমার চামড়ার নিচে এখন গলিত লাভার মতো সঞ্চিত পাপ,
আর দেহের মাংসগুলো ছিঁড়ে যাচ্ছে মহাকালের অদৃশ্য কামড়ে,
আর আমি নিজেও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি ধ্বংসপ্রায় মুহূর্তে মুহূর্তে,
আমার নিঃশ্বাসে আজ বিষের ভারী প্রবাহ,
আর আমার আত্মা কেবল যেন এক অস্তিত্বহীন ছায়া,
আটকে আছে অপসৃয়মান জীর্ণ দেহে।

আমি জানি, শীঘ্রই এমন এক সময় আসবে
যখন আর কোনো অনুভূতি থাকবে না আমার ভেতরে,
কোনো শব্দ, কোনো চিৎকার পৌঁছাবে না আমার কানে।
আমি হয়ে যাবে নির্বাক, নির্জীব এক শূন্যতার প্রতীক,
আর আমার আত্মার সীমানা মিশে যাবে মহাশূন্যের অতলে।