ছায়া মানবেরা বলে,
"সব কিছু বলো, খুলে বলো, নিজেকে মেলে ধরো,"  
কিন্তু আদৌ কি কেউ ধরতে পারে অন্যের আসল চেহারা?  
পৃথিবীর এই প্রেম শূন্য গলিগুলোয়,
আমিও খুঁজেছি কারও কাছে নিজেকে নগ্নভাবে মেলে ধরতে,  
কিন্তু কোথায় সেই স্থান?
কে সেই ছায়ামানব?  
কার কাছে খুলে দেখাবো মনের ভেতর জমে থাকা—  
এই ক্রোধ, ক্ষুধা, যন্ত্রণা, পচা হৃৎপিণ্ডের জঞ্জাল?

জানি, আমার ভেতরের পচন যদি কেউ দেখতে পায়,  
তাহলে কোনো এক মৃত নদীর জলে গা ভাসানো শবের মত,
আমিও হয়ে যাবো বেওয়ারিশ।  
সবার কাছে অচেনা হয়ে উঠবো এমন বস্ত্রহীন ভয়াবহতায়,  
যেখানে তোমরা নিজের অস্তিত্বকেও চিনতে ভুল করবে।

আমার একাকিত্বের দিনগুলো দেয়াল হয়ে উঠছে আমার চারপাশে,  
সময়ের সাথে দেয়ালগুলো মোটা হচ্ছে আর বন্ধ করছে আলো,  
এক এক করে সব জানালা, সব দরজা আটকে দিচ্ছে।  
ভবিষ্যতের নামে সংশয়, আর বর্তমান শুধুই দেয়ালের কারাগারে বন্দি,  
আর অতীত— ভ্রান্তির স্রোতে ভেসে যাওয়া এক মৃত স্মৃতি।

আর আমি জানি,
আমার হৃদয় নরকভূমিতে ফোঁটা ফুলের মত মরে গেছে,
ফুল— যার রঙ নেই, গন্ধ নেই, কেবল শুকনো এক কঙ্কাল,  
তবু তা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছি কারণ...  
আমার হাতে আর কিছুই ধরার মত নেই।

তোমাদের প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়—  
যদি আজ আমার ভেতরের এই নোংরা,
নিষিদ্ধ ক্ষতগুলো তোমাদের সামনে মেলে ধরি,  
তবে তোমরা কি তখনো নিজেকে সহ্য করতে পারবে?  
নাকি আমায় দেখে নিজেই পালাবে,
নিজেকে আর নিজেদের সব কামনা নিয়ে?
জীবন থেকে পালাবে, নাকি নিজের কষ্ট, লজ্জা,
আর অতীতের ভয় নিয়ে একা থাকতেই পছন্দ করবে?

কখনো কি বুঝবে,
এই পৃথিবী আমাদের জন্মের অনেক আগেই মরে গেছে?  
আজকে শুধু আমি, তুমি আর আমাদের খালি কঙ্কাল,  
যারা বেঁচে আছি মনে করি, অথচ ভেতরে ভেতরেই পচে গেছি,  
আমাদের জন্মের অনেক আগেই...