আমি সেই দণ্ডিত, যে শিকারের দিন আসে বাঁচার লোভে;  
চূর্ণ ধূলির নীচে চাপা পড়া কথাগুলো আমার নামে কাঁদে,  
অথচ আমি হাঁসফাঁস করতে থাকি অন্ধ গুহায়,  
নিজের গলায় চাপিয়ে দিয়ে তীক্ষ্ণ শৃঙ্খলের বোঝা।  

তুমি আমার একমাত্র অভিলাষ;  
তাই তোমার জন্য তীব্র ক্ষুধার তাড়নায় আমি হাঁ করে অপেক্ষা করি,  
যেন মরুভূমির পশু জল খোঁজে চৈত্রের মরীচিকায়,  
আপসোস জানতাম না, তুমি বরং এক জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড—  
যার শিখায় ঝলসে যায় আমার স্পর্শ, প্রত্যেক দীর্ঘশ্বাস।  

আমার রক্তে আজ মিশে গেছে মরণঘাতী সাপের কালো বিষ—  
তাই তো তোমার দিকে তাকানোর ইচ্ছে হলেই দেখি—
নির্জন, জন-মানবহীন শহর,  
যেখানে শীতল ইটের ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায় অন্ধকার।

তুমি আমার শিকারের লোভ,  
হয়তো তাই তোমার কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি
ভাঙাচোরা দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে;  
আর আমার বুকের ভেতর দম আটকে যায়
যেন কুয়াশাচ্ছন্ন অতল জলে ডুবে যাচ্ছি ক্রমাগত,  
এখন আর চাই না মুক্তি—  
এ যেন স্বেচ্ছা বন্দিত্ব,
মৃত্যুর সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্যে প্রাণের ছটফটানি।

তোমার হাত ছুঁতে গিয়ে দেখি,  
আমার হাত আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে;  
এখন কেবল নিঃসঙ্গ, রুক্ষ, মুঠোয় ধরে রাখা শব্দের স্তূপ,
যা চিৎকার করে বলে—  
“আমাকে ছেড়ে যেও না,”  
তবুও, সে এক অন্ধকার পরিসরে হারিয়ে যাই,  
যেন এইটুকুই ছিল বেঁচে থাকার শেষ সম্বল,  
একমাত্র অভ্যাস, কেবল সেই লোভ—  
শিকারের দিন আসছে, আমিও তোমার জন্যে প্রস্তুত।