কবিতার সাথে বন্ধুত্ব খুব ছোট বেলা থেকে,
সেই ছোট নদী, তালগাছ, আদর্শ ছেলে কে দেখে
মনে মনে ভাবতাম একদিন আমিও লিখব,
কবির চোখে জীবনটাকে দেখব।
কল্পনায় কখনো বা বীরপুরুষ হতাম,
মা-কে পালকি তে বসিয়ে ঘোড়া ছোটাতাম।
কখনো বা খালি গায়ে, কালো হাতে কাঁচি নিয়ে,
নিজেকে রূপাই ভেবে বসতাম।
প্রায়ই শুনতাম হতভাগা এক কবির কথা,
জীবনের ঘড়ি যার থেমেছে মাত্র একুশে।
যার ঝলসানো রুটি আজও দেখি আকাশে।
ইচ্ছে করত পাঞ্জেরি হয়ে হাল ধরতে,
বৃক্ষের মত মৃত্তিকা ফুঁড়ে আকাশ দেখতে,
কিংবা গুপ্তের ভাবাদর্শে মানুষ হতে।
অথবা, আবারও ফিরতে জীবনের বাংলায়।
একবার জীবনানন্দের কবিতা কিনেছিলাম ২০ টাকায়-
প্রশান্তি দেখেছিলাম বনলতার চোখের কোনায়-
শুনেছিলাম সুরঞ্জনাকে ফেরানোর তীব্র আর্তনাদ।
অতঃপর চোখে পড়ে কাস্তে র মত বাঁকা মেঠো চাঁদ।
ভাবতাম আমিও লাঙ্গল চালাবো কবিতাতে,
“সেই সব পাখি, ঘোড়া আর
সাদা দালানের নারীকে” ফেরাবো পৃথিবীতে।
তখনও জানতাম না কবিতা বলে কাকে।
অন্ত মিলের হিসাবে কি আর
কবি বলা যায় যাকে তাকে?
“স্বাধীনতা যার নিহিত রবে অসম্ভবের মাঝে;
যে জানবে সফলতা তার আসবে না কোন কাজে”
-তাকেই কবি বলেছেন মার্টিন।
অতঃপর ভাবলাম, লিখব একটি কবিতা
থাকবেনা যেথা সিন্ধু, গিরি, সবিতা।
থাকবেনা কোন উপমা কিবা অন্ত মিল
মনের কাব্যে রাঙাবো আপন ঝিল।
নাই বা পড়ুক আমার কবিতা কেউ
নাই বা আসুক কলেজ ম্যাগাজিনেতেও।
কিবা আসে না বললে কেউ ‘কবি’?
থাকনা পড়ে মনের কোণে অপূর্ণাতা যা সবই।
সুকান্তের মোরগ সেবার ছেড়েছিল দামি প্রাসাদ,
আস্তাকুড়েই পেয়েছিল যত খাবার ।
রবীন্দ্রনাথের নৌকা ডুবেছে অনেক আগেই,
হেমের জীবন কেটেছে দোলাচলে।
শ্রীকান্ত কে ছেড়ে কমললতাও গেছে চলে-
আর হিমুর পকেট!! সে তো একই রকম ফাঁকা
আমার স্বপ্ন না হয় থাকল নকশী কাঁথায় আঁকা!!!