একজন অখ্যাত কবি-
উটের পিঠেতে করে যাচ্ছিল সরোবর পানে,
সহসা দৃষ্টি পড়ে সুশোভিত স্নিগ্ধ মরূদ্যানে।
পুষ্প আবৃত সেথা, প্রজাপতি ঘেরা উপবন,
বিরল দীঘিতে ঝিকিমিকি করে দগ্ধ তপন।
উট হতে নেমে তিনি হাঁটা দেন সুরভীর পথে,
সরোবর পড়ে রয় অদূরের মুগ্ধ জনস্রোতে।
সব ফেলে তিনি যান দৃশ্যমান উদ্যানের খোঁজে,
আর মাত্র কিছু দূর, অতঃপর মাতিবেন ভোজে।
ঘামে ভেজে পদধূলি, যান চলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পায়ে,
কেটে যায় ক্ষণকাল হরষের স্নিগ্ধ অভিপ্রায়ে।
উদ্যান নাহি মেলে এসেছেন বহু ক্রোশ দূরে,
ক্লান্ত শ্রান্ত কবি সব ফেলে আজ ভবঘুরে।
দিকভ্রান্ত হয়ে তিনি ছুটেছেন যেথা মরীচিকা,
সম্বল ফুরায়ে গেছে, আশা আজ শপ্ত চণ্ডালিকা।
শীর্ণ দেহ দুমড়ে পড়ে তপ্ত বালি গায়েতে লুটায়ে,
অদূরে শকুন হাসে, আজ পেট ভরবে মড়া খায়ে।
সর্বস্ব হারিয়ে কবি ছুটেছেন অন্তিম পথে,
পিছে হাসে সরোবর, দূরবর্তী মুগ্ধ জনস্রোতে।
তৃষ্ণায় বেদনায় ক্ষুধার্ত হয়ে মরে কবি,
শকুনে ছিঁড়ছে তার অক্ষিতে দেখা প্রিয় ছবি।
কত ব্যথা, স্নিগ্ধ কথা থাকত তার ক্লান্ত মগজে,
আজ সবই থেমে গেছে, চলে গেছে শকুনের ভোজে।
একজন অখ্যাত কবি-
উটের পিঠেতে করে যাচ্ছিল সরোবর দিকে,
ঘাড় ছিঁড়ে খায় কাক, ভুল পথে সবকিছু ফিকে।