ইদানীং তোকে খুব বেশীই স্বপ্নে দেখছি, এবারের দেখাটা আগেরবারের মতোন নয় একদম আলাদা, আগের গুলো ছিলো হঠাৎ দেখা, নন-সিকুয়েল, এবারের টা সিকুয়েল, যেখান থেকে শেষ হচ্ছে পরদিন সেখান থেকেই দেখছি... অবাক হচ্ছিস? অবাক হওয়ার মতোই.. এই দীর্ঘ মরিচীকার জীবনের ভেতর আরও একটি ক্ষুদ্র স্বপ্নের মরিচীকার জগত, প্যারালাল ইউনিভার্স বলতে পারিস, আমি কেনো জানি ক্রমশ সেই জগতকেই বেশী প্রায়োরিটি দিচ্ছি, প্রতিদিন ব্যস্ততায় নাস্তানাবুদ হয়ে সেই জগতের জন্য অপেক্ষা করছি, সেখানেই স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছি..
ওহ আচ্ছা! জগতটার রূপরেখাই তো বলা হলো না,দাঁড়া বলছি, জগতটা এই পৃথিবীর মতোই একদম অবিকল,মানুষগুলোও একই; তবে দারুণ একটা পার্থক্য আছে, যে পার্থক্য দুটো জগতকে আকাশসম দূরত্ব দিয়েছে। মানুষগুলোর চিন্তাভাবনা,চলাফেরা কোনোকিছুই এ জগতের সাথে মিলে না, এই যে তোর কথাই ধর, এ জগতে তুই আমায় যতটা না বেশী ঘৃণা করিস সে জগতে তুই এক মুহূর্তও আমায় ভালো না বেসে থাকতে পারিস না, এ জগতে যে মানুষটা শত্রুভাবাপন্ন সে জগতে সেই বন্ধুত্বসুলভ। সেখানে কোনো দুঃখ, কষ্ট, অন্যায় অত্যাচার কিছুই নেই বরং আছে এক আকাশ ভালোবাসা। এ জগতে আকাশ মেঘলা হলে যেমন বৃষ্টি নামে, সে জগতে ভালোবাসা নামে।
সে জগতে তোকে দেখেই সব'চে অবাক হয়েছি, আর অবাক হয়েছি প্রিয়মানুষগুলোকে দেখে। আমাদের সম্পর্ককে কি স্বাচ্ছন্দ্যেই না মেনে নিলো তারা। যা এ জগতে অকল্পনীয়।
আমার মাঝে মাঝে কি ইচ্ছে করে জানিস? ইচ্ছে করে দুটি জগতের যে বিস্তর ফারাক! তা এক তুড়িতেই মুছে দেই। চেষ্টা করেছিলাম যদিও আজও করে যাচ্ছি। সময় পেলেই এ জগতকে সে জগতের সাথে তুলনা করতে বসি। ভাবি এই মুহূর্তটায় সে জগতে ঠিক কি হচ্ছে? এই ধর, এই মুহূর্তটা! বাসের জ্যামে বসে থাকা আর গল্প লিখা, আচ্ছা ঐ জগতে কি হঠাৎ করা তোর ফোনেতে আমার মুঠোফোনটি বেঁজে উঠতো, উঠতো বৈকি! এ জগতে যা যায় না ভাবা..
একদিন তো বলেই বসলাম ভরা মজলিসে তোকে আমার কী ভীষণ চাই। এ জগতের মানুষেগুলো কি বড় বড় চোখ করেই না তাকিয়ে থাকলো আমার দিকে। দারুণ একটা এক্সপেরিমেন্ট ও হয়ে গেলো। একই রকম মানুষ, আসল মানুষ অথচ কি অদ্ভুত পার্থক্য। এদের যদি একটিবারের জন্য তাদের ভিন্নরূপটা দেখানো যেতো ভালো লাগতো।
জ্যাম ছুটলো,বাড়ি ফিরতে হবে... ঐ জগতটা যে আমায় ডাকছে, এই তো আমি শুনতে পারছি, তুই পারছিস না?
"ওহে আয় রে ছুটে আয় রে তরা,
হেথা নাইকো মৃত্যু, নাইকো জরা..."
-কাব্য
৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২২