যে শহরকে পিছু ফেলে এলাম
সে আমাদের রেখেছে, পুষেছে
একসময়।
অলশ দেয়ালে
আমাদের ছায়া লেগে আছে, এখনো!
অকৃতজ্ঞ অন্ধকার ভুলে গেছে
তোমার নরম আলো।
আমার নিবিড় ছোঁয়ায় জ্বলে উঠতে তুমি!-
আমি আর
লোডশেডিংয়ে মেরুদণ্ডহীন ল্যাম্পপোস্টগুলো
সাক্ষী তার!
রাস্তাঘাট-ফুটপাথ পাল্টে গেছে কতো!
তুমিও।
দাঁড়াবার যায়গা নেই
এমন উদোম রাস্তায় হাত ছেড়ে গেছো!
আমিতো ছাড়িনি একচুলও!
বেহায়ার মতো ঠিক রয়ে গেছি,
বয়ে গেছি, বখে গেছি,
অজানা-অচেনা আমি!
কেউ ডেকে জিজ্ঞেস করেনি,
'কোথায় যাবে?'
যাই যদি, কিছু আসবে যাবে?
আর যদি থেকে যাই?
নদী হও,
তারপর সংকুচিত জল,
শুকিয়ে যাও!
আমি কতকাল তোমার ঘুমে জেগে নেই,
কতকাল স্বপ্নেও আসিনা!
আমি গতকাল মরে গেলাম,
যে দেহটাকে ছেড়ে এলাম
তুমি তাকে ছুঁয়ে-ছেনে চিনেছিলে একদিন,
এইযে রঙ মিছিল,
প্রেতাত্মার মতো পিছু পিছু,
আমার কপালে ঝুলে থাকা অবাধ্য চুল,
তুমি ঠিক করে দেবে ভেবে
ঠিক করা হয়নি,
সরানো হয়নি আর।
গায়ের কমলা রঙা টিশার্টে শেষ ঘাম,
শুকিয়ে সাদা লবনের দাগ, গন্ধ!
ওটাও পাল্টানো হয়নি আর,
যদি ফিরে চাও,
শোকের রঙ-গন্ধ ভিন্ন হলে
না চিনে ফিরে যদি যাও!
আজকাল আমার
সময়ের আঁতকে ওঠা নেই,
চলনবলনে ঠিক নেই!
সময় ঘড়ি দেখে পথ চলেনা
আমি হাতে ঘড়ি পরিনা তাই।
আমার ঘরের চার দেয়ালে,
ক্যালেন্ডারে পাতা উল্টানো হয়না বহুদিন,
বিশেষ কোন দিনের প্রতিশ্রুতি নেই,
কোন তারিখে লাল দাগ নেই।
এমন ঝড় আগে কখনো দেখেনি কেউ,
বাতাস উষ্ণ হঠাৎ টর্নেডো!
খালি যায়গাটুকু কেড়ে নিতে,
ঘর ছাড়া করে
আমাকে নির্বাসন দিতে,
ছুটে আসা এতো আহ্বান, চিঠি!
মৃত ভেবে চিঠি লেখেনা কেউ,
মরে গেলে বুঝি ঠিকানা বদলায় আকাশে!
ডাক বাক্স খালি পড়ে থাকে,
ডাক বিভাগের ছুটি।
আমাদের শব্দ বেকার,
আমাদের ডাকপিওন বেকার!
অতঃপর,
চেনা নম্বর ঘুরাতে ঘুরাতে,
আঙুল অবশ হয়ে আসে,
তুমি নিরুত্তর, নিরুত্তাপ!
কে আছে আশেপাশে,
কে ঠোঁটে আঙুল চেপে আছে?
নিশ্চুপ মানে উবে যাওয়া নয়,
কে জানে আমার মতো!
আমার মতো কে ভালোবাসে?