আমার ঘুম ভেঙে পৃথিবীতে জেগে উঠলে
আলগা নিজেকে জড়ো করতে
কয়েক মিনিট লাগে।
সকাল সকাল আকাঙ্ক্ষা বড় নরম হয়,
যেমন তুমি লালিত শিশু একসময়,
অথবা আমি,
আহ্লাদী বেয়ে ওঠা লতায়-পাতায়,
জড়িয়ে থাকা পেট-বুক এক করে!
আমি অকাতর, তোমার ভিন্নতর
ঘন অন্ধকার ধাওয়া করে,
কুয়াশা ছাড়া কিছুই পাইনা!
অথচ আরো রোদ চাই পোহাবার,
আরো একটু বৃষ্টি আর্দ্রতার!
বলেছো, কোমল দু'হাতে
রাখো পৃথিবীর ভার!
তুমি আছো মাথার ওপর,
এই ভেবে সব আলো
মেঘ মাথায় ঘুমোতে যায়!

আছো কোথায়?
এখানে ঘাস সবুজ হতে
আরো প্রশ্রয় দরকার!
তোমার নির্লিপ্ত থাকায়
আমার মাটিতে বসে আকাশের বাসনা
রাতভর জেগে থাকা পেঁচার চোখেও
হাস্যকর হয়!
তুমি আমার আলোর পিছে
পরে পাওয়া নির্ভেজাল
একলা থাকার অন্ধকারটাও শুষে নিলো!
আমি নক্ষত্রের খোঁজে
মহাকাশে, মৃত নক্ষত্র হয়ে যাই নিজে!
তোমার রেখে যাওয়া শুন্যতায়
কিছু ওম, কিছু গন্ধ অবশিষ্ট তাই,
অভ্যস্ত চোখজোড়া কেড়ে নিলে!
আমার বানী আকাশবানীর মতো
ফ্রিকোয়েন্সি দৈন্যতায় ভোগে!
শেষ সুতো ছেড়ে
রঙিন ঘুড়িটা
লাটাই বিহীন ভোকাট্টা ওড়ে!

আমার মাথা নুয়ে আসে,
চোখ কুঁচকে আসে,
আমি প্রকাশ্য আলোয়,
প্রত্যাবর্তন আর
প্রত্যাখ্যানের লজ্জায় তাকাতে পারিনা!
যে হাতে বাতায়ন দাও,
একই হাতে রোধ করে রাখো
জীবনের শোধ-
বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চললে!
মাথায় হাত বুলিয়ে বললে,
"ভালোবাসো, তুমি ভালো ছেলে,
পোড়ো কিন্তু চেওনা।"
আমি চোখ ফিরিয়ে চাইনি,
সেইদিন বৃষ্টি ছিলো বলে,
বাড়ি ফিরিনি,
বাজ পড়েছে আশেপাশে, উঁচু বৃক্ষে!
আমি অবদমিত, নিচু-
আমার মাথায় প্রতিশ্রুতির ঢাল!
বৃষ্টি ভিজে জবুথবু, নিশ্চুপ পুরুষ!
সেইদিন খুব বাঁচা বেঁচে গেলাম-
আমার যাবজ্জীবন হলো!

আপন ভেবে যে ডালে
নিয়মিত বসবাস,
সে পাখিরাও গৃহ হারা, অসহায় আজ!
এই মরা বৃক্ষ কাঠ ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করে
যদি বলি, ফিরবোনা-
সে না ফেরার পথেও বাঁধা হয়ে আছো!
অমানুষ হলে কবি হতাম,
মরলে যাবো কোন চুলোয়!