আমার মৃত্যুর পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না
আমার জন্মের পর মায়ের মধুর কণ্ঠে যে নাম ডেকেছিল
যে নামের বিশেষত্বে সকলে সম্মানের চোখে দেখতো
সে নাম ধরে ডাকবে না কেউ আর,
যে প্রিয়তম স্ত্রী বুকের উপর না শুয়ে ঘুমোতে পারতো না
আমার লাশের পাশে এক রাত কাটানোর ভয়ে সেও মোর্চা যাবে
রাত্রিতে আমার নাম শুনলে থর থর করে কেঁপে উঠবে তার হৃদপিণ্ড।
আমার মৃত্যুর পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না
যে ঘরে আমার আদ্যোপান্ত বসবাস ছিল সে ঘর থেকে আমাকে বের করে দেয়া হবে
আমার ব্যবহৃত খাট বালিশ বাসন-কোসন সব স্থান পাবে বদ্ধ এক কুঠুরি ঘরে।
আমার মৃত্যুর পর আর কিছুই আগের মতো থাকবে না
আমার আত্মীয়রা আসবে শেষ বারের মতো দেখতে
দীর্ঘ সময় তাদের সাথে যোগাযোগ না রাখার অভিযোগ আর থাকবে না তখন
আমার ছেলেবেলার প্রেমিকার পঁচিশ বছরের অভিমান ভেঙে চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়বে দু'ফোঁটা অশ্রু জল।
আমার মৃত্যুর পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না
আমার সাধের কবিতার খাতায় জং ধরবে
যে কবিতার খাতায় প্রতিদিন আমি একটি একটি শব্দে এঁকে দিতাম হৃদয়ের নৈশব্দ
আমার প্রিয় কবিতার বইয়ের মলাটে জমবে চিমনির কালির মতো ধুলোর আস্তরণ।
আমার মৃত্যুর পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না
আমার কোন বন্ধু থাকবে না; না কোন শত্রু, না কোন স্বজন,
যে ইচ্ছে গুলো দীর্ঘ তেত্রিশ বছর খাঁচায় বন্দি ছিল তা উড়তে থাকবে আকাশে আকাশে দিগন্তে...