পাহাড় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে শত বছর ধরে,
ঝড় আসে, বজ্র নেমে আঘাত করে,
তবু সে নত হয় না, তার উচ্চতায় বিন্দুমাত্র কমতি নেই।
কত মেঘ ভেঙেছে তার গায়ে, বৃষ্টির ধারায় হয়েছে ক্ষয়,
তবু সে দাঁড়িয়ে আছে, অটল, দৃঢ়তায় অনড়।
মনুষ্য হলে কি পাহাড় তার স্থিরতা ধরে রাখতে পারত?
তোমরা মানুষ, তাই তোমাদের মন ভেঙে যায়,
কষ্টে, বেদনায়, সহজেই হারিয়ে ফেলো নিজের বিশ্বাস।
কিন্তু পাহাড়, সে জানে তার নিজের সীমা,
সে জানে কীভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় প্রতিকূলতার মুখে।
প্রিয় মানুষ চলে গেলে মানুষ কাঁদে,
পাহাড় কাঁদে না—সে জানে, স্থিরতা হলো তার শক্তি।
হে ঈশ্বর, আমাকেও পাহাড় করে দাও,
যেন প্রতিটি আঘাতেও আমি নত না হই।
স্থির থাকি, যেমন থাকে পাহাড়, অটল ও অবিচল!

জীবনভর কাঁদে নদী, তবু থামে না তার চলা,
পাহাড়ের বুকে আঘাত পায়, তবু সে বয়ে চলে অশ্রুহীন।
আমরা কি জানি নদীর কত ক্ষত, কত বেদনা?
তবুও সে হাসে, তার ঢেউয়ে বাজে আনন্দের সুর।
মনুষ্য হলে কি নদী তার পথে অবিচল থাকতো?
তোমরা মানুষ, তাই সহজে থেমে যাও,
তোমাদের চোখে লুকিয়ে থাকে অশ্রু, প্রতিটি ক্ষণে।
কিন্তু নদী, সে জানে না থেমে থাকা—
সে তো কেবল চলে, তার গন্তব্যে পৌঁছোবার অপেক্ষায়।
প্রিয়জন চলে গেলে মনুষ্য হৃদয় কাঁদে,
নদী কাঁদলেও, তার ঢেউয়ে সে ঢেকে ফেলে সব।
হে ঈশ্বর, আমাকেও নদী করে দাও,
যেন কষ্টে ডুবে গিয়েও, আমি বয়ে যেতে পারি।
থেমে না যাই, যেমন থামে না নদীর অবিরাম পথচলা!