আমি ফিরে এলাম,
অনেক বছর পেরিয়ে,
পথের ধুলা মুছে ফেলে,
অচেনা শহরের মুখোমুখি দাঁড়ালাম,
যে শহর একদিন আমার ছিল।

গাছের নিচে ছায়া নেই,
যেখানে একদিন আমরা বসে স্বপ্ন দেখতাম,
আমাদের কথাগুলো হাওয়ায় ভেসে বেড়াত,
এখন সেখানে কংক্রিটের দেয়াল
আর অচেনা মুখের ভিড়।

বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে
যেখানে প্রতিদিন মায়ের মধুর কন্ঠ শোনা যেত ,
আজ সেখানে বৃষ্টির জলে
কেবল শূন্যতার শব্দ বাজে।
দরজার খিল খুলে দেখলাম,
এক টুকরো সময় পড়ে আছে মাটিতে,
পুরনো স্মৃতির মতো ধুলোমলিন।

আমি চিৎকার করে ডাক দিলাম— ‘মা!’
কেউ জবাব দিল না,
মরচে ধরা সেই দরজায়
ক্যাচক্যাচ শব্দ ছাড়া কিছু শোনা গেল না।

আমি বাড়ির আঙিনায় হাঁটলাম,
শৈশবের দিনগুলো যেন পাতার মতো ঝরে পড়ল,
জলাশয়ে নেমে এল একফোঁটা শান্তি,
আমি যেন ফিরে গেলাম,
একটি পরিবর্তিত পৃথিবীর মাঝে
যে আমি ছিলাম;
আমার সেই,
রোদ্দুরে ভিজে যাওয়া বিকেল
আকাশে উড়ন্ত ঘুড়ি
মাটির গন্ধে ভরা বর্ষার দিন
বৃষ্টির ফোঁটায় ভেসে আসা কাগজের নৌকা।
জানি আমাদের আর ফেরা হবে না,
কখনো আর কোনো আম-জাম জারুলের বেগুনি মায়ায়...
প্রজাপতির রঙিন ডানায় আমার সেইসব নির্মল শৈশবে।