কীসের যেন জটলা! চিৎকার চেঁচামেচি
আরো কিছু ছেলে, আদিম উল্লাসে মেতে যাচ্ছে নাচি নাচি।
অত্যুৎসাহী আমি নই তবু কীসের যেন তাড়না
মনে হচ্ছিলো যদি পেয়ে যাই কবিতার সূত্র একখানা।
লোকমুখে যা শুনি তার এই হাল-বিবরণ
রুটি চুরি করে ধরা পড়ে গিয়ে, চলছে নির্যাতন।
ভীড় সরিয়ে বহু ঠেলাঠেলি করে পৌঁছি কেন্দ্রস্থলে
রক্তাক্ত দেহে মাঝবয়সী এক ছেলে পড়ে আছে মারের কবলে।
নিথর দেহ, সামর্থ্য নেই আর পড়ে পড়ে খাচ্ছে মার
নরপশুগুলো ক্ষান্ত না হয়ে চালাচ্ছে হাত, দিচ্ছে না ছাড়।
পা হতে মাথা বাদ দেয়নি কোথা, পড়ে–নি কারো হাত
একের পর অপর পালা করে পরপর যেন করবেই নিপাত।
আরো কিছু লোক নির্বাক দর্শক দাঁড়ায়ে দেখছে তামাশা
পলক পড়ছে না, যেন তা দেখার অনেক দিনের আশা।
কী অদিম উম্মত্ততা! পশুযুগে ফিরে গেছি আবার
অপরকে মেরে মনের সুখ মেটাতে ইচ্ছে সবার।
শুধু তাই নয়, অন্যকে উৎসাহী করে বলে, পেয়েছি অবলা
আমি দিয়ে এসেছি, যাও এবার তোমার পালা।
পৈশাচিক হর্ষে উদ্বেলিত তাদের মন
জোগাচ্ছে মনের খোরাক কেড়ে অন্যের জীবন।
নরপশুগুলো ক্লান্ত অবশেষে সবাই যাচ্ছে চলে
কিছুই হয়নি যেন নিথর দেহখানি পথিমধ্যে ফেলে।
এরাই আবার স্বাভাবিক হয়ে ফিরে যাবে কাজে
মানুষকে মেরে অনুতাপ খানিক জাগবে না হৃদয়মাঝে
যে হাত দিয়ে মেরেছে সেই পাপী হাত দিয়ে
সন্তানকে করবে আদর বাসায় গিয়ে
পাশবিকতার জীবাণু তার হস্ত ছোঁয়ায়
সংক্রমিত হবে তা বংশ পরম্পরায়।
ওহে প্রভু, অনুতাপ অনল ঢেলে দাও তার বুকে
সেই অনলেই পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয় যেন ধরা থেকে।
না হয় আমার হাতে দাও কিছু ক্ষমতা
তারি সাথে দান করো পৈশাচিকতা
তাদের কুকর্মের প্রতিফল, পিশাচ কাহিনি
তদপেক্ষা কঠোর হবো নেই ক্ষমার বাণী।