শ্রম নাকি দু’প্রকার, কায়িক ও মানসিক
কায়িক শ্রম জানি, মানসিক মনে হয় অলীক।
কী সব আজগুবি কথা! শুনে হই বিস্মিত
চিন্তা-ভাবনায় নাকি হয় শ্রম, কথা অতিরঞ্জিত।
কখনো ক্ষেতে কাজ করি, কখনোবা কাটি মাটি
কখনো পাঁচ মণ ভার বহি, মনে হয় মাথা যাবে ফাটি।
উদয় হতে অস্ত, সদা এইসব কাজে ব্যস্ত
আমাদের উপরেই তারা করেছে এইসব ন্যস্ত
শরীরের ঘাম, ঝরে অবিরাম
করছি দিবা রাত্রি বিসর্জন দিয়ে আরাম।
এ সকল কাজ হতে তারা পেতে চায় নিষ্কৃতি
আবার তারা নিতে চায় শ্রমের স্বীকৃতি
শ্রমে তারা বসিয়ে ভাগ, হতে চায় অংশীদার
চিন্তা-ভাবনাকে জুড়ে দিয়ে যা কায়িকের কাছে অসার।
কায়িক শ্রম সে বড়ই কঠিন, আমরাও পেতে চাই মুক্তি
মানসিক শ্রমই সহজ তাতে কম ক্ষয় হয় শক্তি
কায়িক শ্রমের প্রতি এসেছে বিরক্তি
মানসিক শ্রমই করতে চাই, জেগেছে ভক্তি।
বিধাতারও বুঝি ইচ্ছা ছিলো এমনি
অভিযোগ কবুল করলেন তক্ষুণি।
কহিলেন তারে, তোমার আপত্তি হয়তোবা ঠিক
কায়িক শ্রমেই বোধহয় পরিশ্রম অধিক।
দায়িত্ব দিয়ে তোমাকে মানসিক শ্রমে
অভিযোগ জানাও তোমার কবিতার মাধ্যমে
সুযোগ দিলাম তোমায়, প্রমাণে যোগ্যতা
তার ভিত্তিতেই বেছে নিও, কীসে তোমার সক্ষমতা!
এ আবার কী এমন কঠিন কাজ
দু’দিনেই চুকাবো কবিতার সাজ।
বাসায় গিয়ে, কলম হাতে ভাবছে অবিরত
ভাবখানা যেন কবি হয়েছে কবিগুরুর মতো।
কলম যেখানে ছিলো সেখানেই রয়, মনে সংশয়
পারবে কি করতে শেষ তা নির্ধারিত সময়!
দু’দিন পরে বিধ্বস্ত চেহারাতে
লাজে মুখ নত চরম ব্যর্থতাতে।
কহে বিধাতা, লিখতে দিয়াছি শুধু একটি কবিতা
তুমিও তা মনে করে সোজা কিন্তু দেখালে অপারগতা
আরো কত গবেষণা, নিত্য-নতুন আবিষ্কার
তা করতে মাথায় নিতে হচ্ছে অপরিমেয় ভার।
আমারি হয়েছে ভুল, করছি তা কবুল
শ্রমের ক্ষেত্র দুটি ভিন্ন কিন্তু অভিন্ন মূল
আমায় দিয়াছ তুমি দৈহিক শক্তি
তার দ্বারাই শ্রম দানে প্রকাশিব অনুরক্তি
মানসিক শ্রমকে এবার স্বীকার করে নিয়ে
আমাদের তরেই তাদের উৎসাহ যাবো দিয়ে।