বাবা বলে ডাক্তার, মা বলে ইঞ্জিনিয়ার
আবার তারা বলে, পাশের বাড়ির ছেলে
হয়েছে ক্রিকেটার, কত নাম-যশ তার
সবাইকে পিছে ফেলে, সুখ্যাতি শুধু খেলে।
যখন দেখে টিভি, মা বলে অভিনয় করবি
বাবা আরো একধাপ এগিয়ে, মাকে দেয় থামিয়ে
বিখ্যাত নায়ক হবি, পোস্টারে ছেয়ে যাবে তোর ছবি
মা বাবাকে বুঝিয়ে, নায়কোচিত দর্শন জন্মেনি নিয়ে।
কবিগুরুর জন্মদিবস এলে, প্রত্যাশা আরো ডানা মেলে
উত্তেজনা টানটান, উচ্চস্বরে বলে পেয়েছি সমাধান
কবি হতে হবে সবকিছু ভুলে, আমায় ডেকে বলে
কবির কত সম্মান, সবাই ভালোবেসে দিতে পারে প্রাণ।
কিছুদিন পর সজাগ করি কান, শুনি নতুন ফরমান
পত্রিকায় নেতাকে দেখে, নতুন স্বপ্ন আঁকে দু’চোখে
সবাই ভয়ে কম্পমান, যেদিকে তাক করে কামান
মা আবার গেলো বেঁকে, রাজনীতি করতে দিবো না তোকে।
পরলোকে মুক্তি দৃষ্টি তার উপর, পরলোকের চিন্তায় এখন বিভোর
ধর্মকর্মে দাও মনোযোগ, ত্যাগ করো অসৎ সংযোগ
দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী ঘর, তালা দিয়ে- খুলবে পরকালের দোর
নেমে আসবে খড়গ, যদি ধর্মকে করো বিয়োগ।
শিক্ষকতা মহান পেশা, করে আছি সেই আশা
জ্ঞান বিলিয়ে সারাক্ষণ, জ্ঞানেই কাটাবি আজীবন
মনে থাকবে না নিরাশা, পাবি সবার ভালোবাসা
এই কথাটি রাখবি স্মরণ, মূর্খতায় জীবনের পতন।
নিকটাত্মীয় মিঠাই হাতে, যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনিতে
বাবা-মার মন, আবার হয় পরিবর্তন
দেশকে ভালোবাসতে, ডুবতে হবে দেশ সেবাতে
থাকবে না অনটন, প্রতিষ্ঠিত যদি হও এখন।
এত স্বপ্ন! এত আশা, আমার কাছে লাগে তামাশা
পারবো কি নিতে সব ভার, মন যুগিয়ে চলতে সবার
মনের মাঝে জাগে হতাশা, ঘনিয়ে আসে অমানিশা
একটিমাত্র ছেলে জন্মেছি একবার, আরও কতক তাদের ছিলো দরকার।
একা আমি একজন, কী করে করবো এত স্বপ্নপূরণ
আমি কী হতে চাই, তার উত্তর না পাই
জীবনটা আমার যখন, আমারও অভিমতের আছে প্রয়োজন
পরিশেষে বলা তাই, স্বপ্নানুযায়ী আমাদের ডেকে এনো সবাই।