ক্ষমতার 'বিল' দম্ভ দেখায়,
রক্তে জাগে মার ।
অধিকারের নেশায় তখন-
'বরাক'ও তোলপাড় ।
তিন ভুবনে দ্রোহের আগুন-
'স্বীকৃতি' যার আশ ।
ট্রেনের ধারে বাংলা ভাষীর
জমাট রুদ্ধশ্বাস ।
গুলির তোড়ে স্টেশন রুটে
মৃতের মহোৎসব,
'এগারো'র প্রাণে মিশে আছে আজও
'বাংলা'র গৌরব ।
ইতিহাসের জোয়ার-ভাঁটায়
নোঙর বাঁধে মন,
বর্ণমালার বুকেই বাঁচেন
আমার আপনজন ।
এই ভাষাতেই মায়ের খোকার
স্বপ্ন হাসে-কাঁদে ।
এই ভাষাতেই আঘাত ভীষণ
ফুরোয় আর্তনাদে ।
এই ভাষাতেই 'ভারততীর্থ'
'কাণ্ডারী হুশিয়ার' ।
এই ভাষাতেই 'কাস্তে' হাতে
জেগেছে 'ঘোড়সওয়ার' ।
এই ভাষাতেই বাস্তুহারার
ডায়েরি লেখেন কবি ।
এই ভাষাতেই সুরের খেয়ায়
শিল্পী আঁকেন ছবি ।
এই ভাষাতেই বাউল দুপুর
ভুবনমাঝির গাঁয়,
আজ শহরপোড়া গন্ধ বেচে
হালকা হতে চায় ।
জষ্টি এলেই ঘুমন্ত শোক
অগ্নিবীণায় গায় ।
যেন বছর জোড়া বেখেয়ালের
চূড়ান্ত এক দায় !
তাই আত্মপরিচয়ের হিসেব
ভাঁড়ার ঘরে বন্ধ ।
শেকড়বিহীন বাঙালি গড়ছে
এক-পৃথিবী অন্ধ ।
বর্ণমালাই আকাশ আমার
উনিশ মাথার ছাদ-
কৃষ্ণচূড়ার আগুন পোড়াক
সকল বিসম্বাদ ।
একাকার হোক উনিশ একুশ
সব বাধা বন্ধন ।
বাংলাই হোক বাঙালির প্রাণে
যাপনের স্পন্দন ।