বৈকুণ্ঠ-লক্ষীর পদচিহ্নে মিশে আছে
ডাক্তার কত্তার নাবালক চোখ রাঙানি,
অবগুণ্ঠিতা ঠাম্মার অজস্র কালঘাম ।
কেঁচোর গর্ত খোঁড়া দাওয়ায়
যেন রোজকার উৎসব ।
ডাক্তার দাদুর হেঁড়ে গলার ভাঙা বন্দিশে
ঠাম্মার চিবুক বেয়ে সোহাগ নেমেছে যে ভিটেয়-
মোহন মাঝি, রমজান চাচারা বেহায়া সেজেছে বহুবার ।
সবই এখন নিখোঁজ, নিথর, ডুবন্ত এক আধেয়ায় ।
জ্বর, কাশি, গাঁটের ব্যথার দাওয়াই নিতে
দাদুর ছোটলোকের বাচ্চারা
আজ আর দাওয়ায় ভিড়ে না ।
শুধু ঘোমটার ইশারায়
মুড়ি মুড়কি ফলের হাত বদলের ইতিহাসে
নাম লিখিয়েছিল যারা-
কত্তার গালভরা বকুনিতে
গা ভাসাবার আমোদ তাদের নেই ।
আকাশভাঙা বৃষ্টি আর
কেঁচোর রিহাং নৃত্যের গুমোট আলাপচারিতায়
কত্তার দেয়ালে ঠেকা পিঠ যেন হৃদয়কে বলে,
'মরবা গো মরবা, তোমার লক্ষীপণা ভাত পাইব না ।'
রমজান আলী যেদিন নীলকণ্ঠ ভোরে
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল একাকার করে
কত্তা কত্তা বলে ফিরেছিল দাওয়ায়-
ভাঁড়ার-রক্ষীর বুকে সেদিন
বাজি জেতার সুখ ।
আহ্ রমজান ! তোর পোলার কান্না থামা ।
এই দুই পুরিন্দা ওষুধ দিলাম ।
বুকের ব্যথা সাইরা যাইব ।
ও ওষুধ লাগব না কত্তা ।
একবেলা খাওন দিয়েন ।
একবেলা খাওন দিয়া দুইডা লাত্থি দিয়েন ।
ও কত্তা, একটু বাসি ভাত, ডাইল যা আসে...
ঠাম্মা ঝড়ের বেগে ভাঁড়ার মুখো হলেন,
হলেন তো হলেন; হলেনই ।
অন্নপূর্ণার দাওয়ায় এখন
খসে পড়া পাতার মজলিশ আর
কেঁচোর মোচ্ছোব ।
বুকের ব্যথা যে কখন
পেটের আগুনে গুছিয়ে নিয়েছে নিজেকে
তার হদিশ পেলো না ভাঁড়ার,
গমগমে দাওয়া,
বাক্সের একধারে মাথা নত বিশল্যকরণী ।