। মেয়েকে খোলা চিঠি।
জানিনা বড় হয়ে ঠিক কি হবি।
জয়েন্টে না পেলে আর কি কি হওয়া যায়, সে ব্যাপারে
আমি একেবারে অজ্ঞ।
এত্ত বড় পৃথিবীতে তুই কোন কাজের কতটা যোগ্য,
সেটা তুই নিজে নিজে ঠিক করে নিবি।
একটা ব্যাপারে তোকে নিশ্চিন্ত করি,
সব ঠিক চললে মা আর আমার ভরণপোষণ নিয়ে ভাবতে হবেনা তোকে।
বলে দেওয়া ভালো এই ব্যাপারটা আগে থেকে,
বড় ঝামেলায় ফেলে শেষ পারানির কড়ি।
সেই সঙ্গে এটাও বলে দিই তোকে এইবেলা,
নিজের মেধার বলে যেখানে এগিয়ে যাবি, সেটার খরচ দিতে আমি পিছাবো না,
তাই বলে ক্ষমতার বাইরে গিয়ে তোকে পড়াবো না,
কোথায় থামতে হবে প্রজন্ম না জানলে বড় ঝামেলা।
নাচ, ছবি তোলা সহ, যাবতীয় শখ আর কিছু পাগলামি,
কেরিয়ার ছুতো দিয়ে যেন কখনো দিসনা বিসর্জন ,
টাকাকড়ি নয় শুধু , সত্যি বাঁচবার মুহূর্ত জীবনে হোক উপার্জন,
বাবা হয়ে সর্বদা সেটাই চাইবো আমি।
কাকে বেছে নিবি তোর পথচলা সাথী,
সে ব্যাপারে তোর সিদ্ধান্তই হবে শেষকথা,
তুই চাইলে মতামত দিতে পারি বটে, তার বেশী গলাবো না নাক অযথা,
বোকা লোকে করে ধর্ম বা জাত নিয়ে বেশি মাতামাতি।
দুঃখ কষ্ট আর বিষাদের ফাঁদ পাতা এই ভুবনে,
যত বড় হবি সেটা জেনে যাবি , বস্তুত জানানোর লোকের অভাব নেই দুনিয়ায়,
তবুও বাড়ালে হাত দরকারী ছায়া রোদ সকলেই পায়,
আমি চাই নিজে নিজে সে সুখের নদীগুলো তুই খুঁজে নে।
ঝড় আর ঝঞ্ঝাট অযাচিত এসে যাবে সন্ধানে তোর
কিছুটা নিজের দোষে, বাকিটুকু জীবনের ব্যাগাডুলি খেলা,
আশা করি সামলিয়ে ঠিকঠাক ভেসে যাবে যাপনের ভেলা,
আমরা তো রইলাম, যখন ইচ্ছে এসে করিস নোঙর।
তোর থেকে চাহিদার কিছু নেই এটা ভেবে বসিসনা যেন।
এক দুইপা করে হেঁটে, আগামী যখন নিবি তোর দখলে,
পরিচয় দিতে চাই তোর বাবা বলে।
চিরকাল শুনে যেতে চাই,এরকম মেয়ে আরো দেশে নেই কেন।
টাকাপয়সাতে নয়, মানুষ হিসেবে তুই বড় হোস মেয়ে,
দয়া থাক, মায়া থাক, তার সাথে থাক প্রতিবাদী হবার সাহস,
ঋজু শিরদাঁড়া যেন না করে আপোস,
আর কিছু চাইবার নেই বাপ হয়ে।
আর্যতীর্থ