। মানুষের মিতা।

রাষ্ট্র কবিকে তলব করলেন তার প্রাসাদে।
সভার মধ্যেখানে ভীষণ ধমকে জিজ্ঞেস করলেন,
‘ শুনলাম, তুমি  নাকি আমার বিরুদ্ধে লিখছো?’

কবি অভিবাদন করে বললেন, ‘আজ্ঞে না তো।’
রাষ্ট্র বললেন , ‘সাবধানে থেকো, তোমার ওপর কিন্তু কড়া
নজর রাখছি।’


ধর্ম কবিকে ডেকে পাঠালেন একদিন।
বেদীর ওপর থেকে নিচে কুঁকড়িয়ে থাকা পদ্যলেখকের দিকে
তাচ্ছিল্যের হাসির সাথে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তিনি..
‘নরকের ভয় নেই? শুনলাম তুমি নাকি ঈশ্বরের বিপরীতে?’

কবি নতমুখে আবছা স্বরে বললেন.
‘আজ্ঞে ভয় নেই বটে , তবে আমি তো ওনার বিরোধী নই।’

ধর্ম বললেন,
‘আমরা স্বর্গ ও ঈশ্বরের তরফ থেকে তোমার ওপর নজরদারি চালাবো।’

রাজনীতি একদিন ঘুম থেকে তুলে নিয়ে এলো কবিকে মাঝরাতে।
কলার ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘ এই শ্লা, তুই নাকি আমার পেছনে কলমবাজি করছিস?
এমন হুড়কো দেবো না.  ‘

কবি তার হাত ছাড়িয়ে অবিন্যস্ত জামা ঠিক করতে করতে বললেন,
‘আপনার বিরুদ্ধে না তো।
ভোর হয়ে এলো, সূর্যোদয় দেখতে যাবেন আমার সাথে?’

রাজনীতি গরররর গরররর করে বললো,
‘ রাখ তোর ফালতু বুকনি ।
শোন্,  আমার ছেলেরা তোর ওপর চব্বিশ সাত নজর রাখছে,
একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই..’

এই সব ঘটনা কবি ঘরোয়া আসরে কিছু অনামী পাঠকের কাছে বলছিলেন।
তাঁদেরই একজন জিজ্ঞেস করেই ফেললেন,
‘তাহলে কবি , আপনি কার বিরুদ্ধে লেখেন কবিতা?’

কবি বললেন, কারোর না। মানুষের পক্ষে লিখি শুধু।
মানুষের কথা বলি মানুষের মাঝে,
আজন্মকাল আমি মানুষের মিতা।

ওই তিনজন কেউ কবিতা বোঝে না ।তাই ওরা খুঁজে চলে শুধু বিরোধিতা।

আর্যতীর্থ