। কাঁচামাল।

আজ অবধি যত প্রাণী আয়ু শোধ হলে মরে গেছে,
তাদের সে দেহগুলো গিয়েছে কোথায়?

আইনস্টাইনের সূত্র  ই ইকুয়াল টু এম সি স্কোয়ার ধরলে,
তারা শক্তি হলে পৃথিবী এতদিনে হাজার তারার সমান জ্যোতিপূর্ণ হতো।
তা যখন হয়নি,
সূর্যের তিননম্বর গ্রহটি আজও যখন তারই সৃষ্টিনক্ষত্রের আলো-প্রত্যাশী,
সুতরাং ধরে নেওয়া যেতে পারে আজকের জৈব অনুতে
সেইসব গতায়ু প্রাণীদের ডি এন এ
নতুন অবতারে মিশে আছে অযুত জীবিত কোষে কোষে,
অতীতের প্রোটোপ্লাজম
বর্তমানের বাতাস জল মাটিতে পুষ্টি জোগাচ্ছে আগামীর চারাদের,
অজৈব’র হাত  ঘুরে আবার
একই কার্বন, হাইড্রোজেন অক্সিজেন নাইট্রোজেন
ঢুকে পড়ছে নতুন জীবনের ধারায়।

তার মানে এই যে আপনি অমুক চন্দ্র তমুক
অথবা অমুকা রাণী তমুকা,
আপনাদের শরীরের প্রতিটি কোষের কাঁচামাল
পৃথিবীর প্রথম এককোষী প্রাণীটির থেকে ধার নেওয়া।
আপনার মধ্যে ঠিক কতটা গাছ
আর কতটা ডাইনোসর,
আদিম শ্যাওলা ও অনতি-অতীতে লুপ্ত হওয়া ম্যামথের অনুপাত কত,
কেউ জানে না।

হতে পারে আপনি যে ধর্মকে গালাগালি দেন,
সে ধর্মের প্রবর্তকের কিছু জৈব অনু
আপনার মগজের কোষে,
আপনি যে দেশের নাগরিককে শত্রু ভাবেন,
তার সাথে আপনার শরীর ভাগ করে নিয়েছে
ধূসর অতীতে হারানো কোনো প্রাগৈতিহাসিক অরণ্যচরের জৈব-অংশ,
যার দেহাংশ আজ অবধি আবিষ্কার হয়নি।

মোটকথা, আপনি যিনিই হোন,
যেখানেই থাকুন আর যাই কাজ করুন,
আপনি তৈরি স্রেফ  কৃমি থেকে তিমিমাছ,
অধুনা-লুপ্ত শত গাছ,
পোকা, পাখি, হরিণ, শুয়োর, গরু , ছাগল ..
এমন লক্ষ লক্ষ মৃতদেহের মিশ্রণে,
আপনার উপাদানের পুরোটাই ধার করা অতীতের থেকে,
আবার আপনিও
আগামী জীবনের কাঁচামাল ছাড়া আর কিছু নন।

তার পরেও আপনি দেশ, জাতি, ধর্ম, ভাষা..
আরো না জানি কত খোপে মানুষজনকে বেঁটে চলেছেন রোজ!

ছোঃ! কাঁচামাল নিয়ে এত কেউ করে নাকি খোঁজ?

আর্যতীর্থ