। যাও না দেখি।

বাঙালির বাছা, ভাষা শিখে নাও বাংলাকে ছেড়ে অন্য
যে যত শিখবে সামাজিকে তত আরো উঁচু হবে গণ্য,
শেখো ইংরেজি, হিন্দি স্প্যানিশ তামিল কিংবা জাপানি,
যত ভাষা শেখো ততই তো ভালো, এতে কেন এত লাফানি
এমন শিখবে , কথ্যতে যেন মনে হয় ভাষা মাতৃ,
পৃথিবীর সব ভাষা জেনে রেখো অসীম জ্ঞানের ধাত্রী,
তামিলের কাছে এক ধন পাবে, হিন্দির কাছে ভিন্ন,
এইটুকু আয়ু , এত সম্পদ, এত সভ্যতা-চিহ্ন,
শিখে নাও বাছা যতখানি পারো  , হরিনাথ দে’র দিব্যি,
সব ভাষা কোল পেতে বসে ডাকে, আয় রে আমায় শিখবি।

মাতৃভাষার ভাবনা কোরো না, সে নদী বইবে ধীরে,
তোমাকে নাহয় নাই দেখা গেলো ঘাটে স্নান করা ভিড়ে,
তার মানে লোক কম দেয় ডুব, ব্যাপার এমন না তো,
কোটি কোটি জিভে রোজ সংলাপ সদ্যবাংলা-জাত,
শোনা যাবে ঠিক, তুমি নেই বলে ঝুলি মোটে নয় খালি,
আপাতসভ্য সাহিত্য-ভাষে মিশবে চলতি গালি,
রোজের আলাপে আমাদের মতো কোটি কোটি ‘বং-গাই
বাংলায় হাসি ,কাঁদি, রাগ করি , ভালোবাসি, ধমকাই ।
বাঙালীর বাছা, যাও তুমি হও  কুশলী ভিন্নভাষাতে
আলিবাবা-গুহা পেয়ে যাবে খুঁজে, সে ভাষাও ভালোবাসাতে।

তবুও কি জানো, সে ভাষার ভাষী তোমাকে দেখবে টেরিয়ে,
তার মা-ভাষাকে তুমি ভালোবাসো নিজের জননী এড়িয়ে,
সেই কথা তুলে মস্করা ছলে মারবেই তির ব্যঙ্গে,
তুমি বেচারি তো জানোনা কী আছে ‘ বিবিধ রতন’ বঙ্গে,
সুতরাং তার বিপরীত বাণে দিতে পারবে না উত্তর,
অবশেষে ঠিক কোনো একদিন বাংলায় বলে ‘ ধুত্তোর!’
ফেরত আসবে বাংলার কাছে, ভাষা বদলাবে ফেসবুক,
সিলেবাসে পড়া কবিতা গল্প, রয়ে গেছে যার রেশটুক,
আবার ফিরবে, পথ দেখাবেন কথার আলোরা এসে,
তাদের ম্যাজিকে ফেলে যাওয়া মা’কে ফেলবেই ভালোবেসে।
শুনবে মায়ের স্নেহের সে ডাক, আয় রে আমায় শিখবি,
বিদেশি যা ধন এসেছিস নিয়ে, চল বাংলাতে লিখবি।

বাঙালীর বাছা, যাও খেলে নাও ভিন-ভাষা নিয়ে ফ্রিসবি,
খেলাশেষে ফিরে আসবেই  ঘরে, বাংলা ভাষার দিব্যি।

আর্যতীর্থ