। ইন্টারভিউ।
‘কি নাম আপনার?’
যে যেমন ডাকে। একখানা নাম নিলে বড় ছোটো লাগে পৃথিবীকে।
‘তার মানে? আমি যদি হরিপদ বলি, কিংবা আলমগীর?
যদি বুঝি আমাকেই ডাকো, সাড়া দেবো ঠিক।
তবে সেটা জোরদার ডাক হতে হবে, নানা আওয়াজের ভিড়ে হারিয়ে না যায়।
‘হুমম, লিখে রাখো, অনেক ‘ওরফে’ ওর , আসল নামটা কি জানাই গেলোনা।’
‘বয়েসটা কত?’
শুরু কবে তা মনে নেই। মনে হয় চাঁদ গ্রহ তারাদের জন্ম দেখেছি। সত্যি দেখেছি কিনা সেটা জানানোর মতো পাশে কেউ নেই।
‘তার মানে? মা বাবা, ভাই বোন?’
‘কেউ নেই, কিছু নেই। আদি থেকে একলাই থাকি। মাঝে মাঝে মনে হয় কাউকে আপন বলে ডাকি, কিন্তু ডাকবো কাকে! একলাটি আমি।’
‘বুঝেছো হে, ছোটোবেলা থেকে বুঝি এই পাগলামি। বয়েস আর মা বাবাতে কোশ্চেন মার্ক!’
‘থাকেন কোথায়?’
‘আমার আর থাকা! সব জায়গায় আছি অথচ দেখতে গেলে কোত্থাও নেই।
‘জাল পাসপোর্ট না গেছোদাদা ? নাকি সেই সিনেমার ডনের মতন? নথি কিছু আছে?’
কিছু নেই। প্যান বা আধার নেই, রাজ্য বা দেশই নেই পাসপোর্ট কোথা থেকে পাবো!
‘তাহলে চেনা কেউ? বলি পরিচিতি পরিচিত কিছুই কি নেই?’
‘যারা চিনি বলে , তলিয়ে দেখেছি তারা চেনেই না মোটে। চারদিকে এতকিছু চলেছে যে ঘটে, তাই দেখে মনে হয় শুধু আমি নয়, সকলে চলেছে খুঁজে আতিপাতি করে নিজেদের পরিচয়।’
‘ওব্বাবা! জ্ঞানদা! বাবুর এদিক নেই তো আছে ওদিক, একখানা জবাবও যদি দিতো ঠিক। ছেলে মেয়ে ?’
অনেক। এত যে শেষ হবে না গুনে। এই তো আপনাদেরও যেন আমারই সন্তান বলে মনে হয়।
‘ধ্যাততেরি! মাথা খারাপ কিংবা অতীব ঘোড়েল! বোধহয় দুটোই।
ওহে নামহীন বেওয়ারিস, কেটে পড়ো, মানুষের বসতিতে এমন কারোর থাকা মোটে ভালো নয়। শিগগির ভাগো!’
সেই থেকে ঈশ্বর মানুষের কাছাকাছি আসতে পারেন না আর।
আর্যতীর্থ