। ঘাট।

নিজেকে ঘাটের মতো করে ফেলেছি।
নৌকোরা সাময়িক দাঁড়ায় শিয়রে
তারপর চলে যায় নিজের সফরে,
কেউ ফিরে হেসে বলে ফের এসে গেছি,
কেউ আবার একবারই পাড়ি-কালে ছোঁয়,
ছলাৎ ছলাৎ করে বৈঠার থেকে কিছু ঢেউ পৌঁছয়।
আমি স্থির, ওরা ভাসমান,
শ্যাওলা-বিধুর এই আমার সোপান,
মাঝে মাঝে মাঝি এসে পায়ে ছুঁয়ে ঘরপানে যায়,
কেউ বা কাছেই তীরে উনুন বানিয়ে তার রান্না চাপায়,
দুটোতেই আমার কিছু না, পাড় অথবা পাড়ি কেউ আমার পিছু না,
নৌকারা চলে গেলে আমার শরীর জুড়ে জল খেলা করে,
দু-একটা মাছ খেলে যায়, খলবলে স্মৃতি নড়ে রোদের ভেতরে,
কিন্তু সে কার কাহিনী রোমন্থন? নৌকার? মাঝিদের?
নাকি সব মিলন আর বিচ্ছেদ গল্পরা আমার নিজের?

বুঝি না। আসা আর যাওয়াদের কারণ খুঁজি না।
এরকমই প্রাচীন এক ঘাট ছিলো যমুনার বুকে,
অশ্রুরা ঢেউ হতো প্রতিদিন রাধার অ-সুখে,
ছলাৎ ছলাৎ করা ভরা অভিমান-গাগরীটি,
চলকানো জল দিয়ে হয়তো বা লিখে যেতো ভালোবাসা-চিঠি,
যা পড়ার পাঠক ছিলো না,
দয়িতটি রাধিকাতে আটক ছিলো না, নদীর জলের মতো বয়ে গেছে সামনের দিকে,
অথবা নৌকা হয়ে। দুটোরই তো এক মানে ঘাটের নিরিখে।

সেরকমই ঘাট হতে , দেখো না ফেলেছি আমি শিখে।

আর্যতীর্থ