। আবোলতাবোল ২০১৯-২২।

ঈশ্বরপ্রতিম সুকুমার রায়কে প্রণাম জানিয়ে..

সুযোগ পেলেই রুমালগুলো   আজও বনে হুমদো হুলো
শিকেয় তোলা মাছ খেয়ে যায় চুপিচুপি এসে
কাকেশ্বরের হিসেবটাতে        পেনসিলটাই সবার হাতে
ভাগশেষে আর কিচ্ছুটি নেই আবোলতাবোল দেশে।

হাঁসজারু বা হাতিমি না       হারাম করে এখন জিনা
এই প্রতীক আর ওই প্রতীকের মর্জিমাফিক সন্ধি,
ভীষ্মলোচন অলপ্পেয়ে       কান খেয়ে নেয় শ্লোগান গেয়ে
সবাই জানে মন্ত্রীমশাই কোন সে  এসেন্সগন্ধী।

বোলো না হে, আরে ছি ছি ,      কারা খেলে কানামাছি
পাহারা দেয় কে ওয়াই সি কে, পশ্চাতে সিঁদকাটা ,
খাচ্ছে এবং গিলছে রাজা     ন্যাড়ার ভাগে গুল আর গাঁজা
উন্নয়নের জোয়ারে আজ বেলতলা  ইঁটভাঁটা।

হেড অফিসের বড়বাবু          নেই-কাজে আজ এমন কাবু,
নিয়ম করে জল আর সাবু সেবন করেন রোজ
উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে        কে আর ফাইল-ধুলো ঝাড়ে
ফক্কা আপিস সবাই হাপিস, ছুটির ওভারডোজ।

রামগড়ুরের নাতির নাতি         ফেসবুক তার নিত্যসাথী
রাজার নামে কার্টুনে দেন মোকদ্দমা ঠুকে,
হাসবে শুধু ওপরমহল            বাকির চোখে সর্বদা জল
এমনতর ভরসা পোষেন বেজায় গোমড়ামুখে।

ভয় পেয়োনা’ বাগিয়ে মুগুর     গাছ কেটে নেয়,বোজায় পুকুর,
নয় ছেলে তার কামড়িয়ে দেয় ভয় না পেলেই বরং
হ্যাংলা হুঁকোর দুখান লেজে      দুই পতাকা বাঁধলে কে যে
এক শরীরেই ডান বাঁ করে লড়াই করার ভড়ং।

আর কত কি বলবো মামা        ধরতে ছায়া মস্ত ধামা
আসল কায়া  সেই সুযোগে ফুড়ুৎ পগারপার,
নিত্য হাঁকে পাগলা জগাই         থাকুক খিদে, যুদ্ধটা চাই
তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিমেই ভোটের ইস্তেহার।

পাগলা কিছু দাশরথি           চেঁচায় দেশের মন্দগতি
ভুল স্বপ্নের গাজর নাকি ঝুলছে খুড়োর কলে,
আদ্যানাথের মেসোর বাড়ি    খুঁজতে থাকে লাখ আনাড়ি
শেষে দেখে শুরুর খোপে এসেছে ফের চলে।

অসুখখানা কি তা জানা        কিন্তু সেটা বলা মানা
গারদখানায় কোন বোকা আর পড়বে বলো ঢুকে
কুমড়োপটাশ নাচ দেখালে      নাচছি সবাই তালে তালে
যজ্ঞিদাসের মামা’র মতন মারছি জগত মুখে।

খুঁজছি সবাই, পাচ্ছি না কেউ  অলীক দ্রিঘাংচুকে...

আর্যতীর্থ

২০২১ সংযোজন..

সবাই বাঁধা খুড়োর কলে,  গাজর হয়ে ধর্ম ঝোলে,
কি যায় আসে রান্নার গ্যাস হাজার ছুঁলে বলো,
বোম্বাগড়ের রাজার পিসি,  বেচেন জিনিস শুদ্ধ দিশি
গরুর হিসির দুধের থেকে দামটা বেশি হলো।

এই কোভিডের বেদম ধাঁধা,  আমজনতার রুজি আধা,
কাঠের বুড়োর শুকনো কাঠই ভাগ্যে শুধু মেলে
সেনসেক্স তাও ষষ্ঠীচরণ,   কোন জাদুতে এই আচরন,
রহস্যটা বুঝতে হবে ফুটোস্কোপে ফেলে।

শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে ,  ভ্যাক্সিনে দেশ খুব এগিয়ে,
লক্ষ্য থেকে দো গজ দুরি একশো কোটির মোটে,
বিজ্ঞাপনের চলছে ড্রামা,     ফসকে যেন না যায় মামা,
ভর্তি যেন হয় ও ধামা সহজ সুলভ ভোটে।

সব লেখা সেই কেতাবখানা,  কি লিখেছে রাজার জানা
ইনফ্লেশনের পাগলা ষাঁড়ে ঢুঁসায় দেশের বুকে,
ছায়া ধরার ব্যবসাদারে,  রোজই দেশের আলো কাড়ে
শিবঠাকুরের আপন দেশে দাঁড়ায় না কেউ রুখে।

কোন সাহসী খুঁজবে বলো অলীক দ্রিঘাংচুকে?

আর্যতীর্থ
                 । ২০২২ সংযোজন।

মাপার ফিতে  উদোর হাতে   খাড়াই কোমর বা গলাতে
সবাই জানে সমস্ত মাপ এক হবে ছাব্বিশে
ঘুমোয় পেঁচা জজ-চেয়ারে,  ধর্ম জেতে লাভ-পেয়ারে
রাজ-আস্তিনে আজ গিয়েছে দেশ-খেকো সাপ মিশে।

গাছের ওপর দুখান পাখি ,  সেইপানে বাণ চলবে নাকি,
এক চিড়িয়া আগুনদামের,  অন্য হাপিস কাজ,
গাছের তলায় পাতা ধামা’য়  দেয় না তাদের লাশ যে আমায়
বরং সে বাণ ফসকে এসে লাগছে বুকের মাঝ।

নোটবই আজ বদলেছে নাম,  মুখবইতে তার অ্যাসাইলাম
তাবত জিনিস এরই পাতায় মগজ ছুঁয়ে ঢোকে,
কোনটা নিজের কোনটা টোকা,  ধাঁধায় লাগে সবার ধোঁকা,
হেঁট মাথাতে সারাটা দিন পড়তে থাকে লোকে।

বুথ সাহেবের বাচ্চারা সব,  গলায় যাদের থিতু  রাসভ,
বড় হয়েও ছিঁচকাদুনে রয়েই গেছে তারা,
ধর্ম নিয়ে তিল-হোঁচটে,      ভীষণ কেঁদে থানায় ছোটে
ভাবাবেগের সামলাতে বেগ এদেশ দিশাহারা।

বৃদ্ধ নাজির শুঁকছে খালি,    কে ভালো কে চোখের বালি,
এক নিমেষেই দেশদ্রোহী বলতে পারে শুঁকে,
আমরা সবাই নন্দগোঁসাই,   তুঙ্গে বোধহয় শনির দশাই,
ঘাড় নেড়ে যাই সঠিক বলে ভাগ-করা ভুলচুকে।

‘সুদিন’ বলে দেখছে এ দেশ  অলীক দ্রিঘাংচুকে।

আর্যতীর্থ