পুরানো এক শীতের মাঝরাতে
আমি তখন ছুটে চলা এক বাসে
জানলার পাশে একলা সিটে বসে
নির্ঘুম চোখে ক্লান্ত শূণ্য মনে,
জেগে আছি আধোঘুম আধো জাগরনে
দোটানায়-
দৃষ্টি হারিয়েছে বাইরে; আঁধারের ছায়ায়,
বাসের সবাই পড়েছে ঘুমিয়ে
শুধু চালকের দৃষ্টি সজাগ; সামনের রাস্তায়।
কুয়াশা ভেদী বাসের তীব্র আলো-
নিয়ে যায় টেনে ক্লান্ত বাসটাকে,
আমি একা জেগে পান করি রাত-সুধা
নেশাতুর চোখ একলা থাকে জেগে।
কুয়াশা মাখা আবছা জানলা কাঁচ,
বাইরে আঁধার, তার মাঝে কিছু আলো
জ্বলে নিভে যেন নির্জন বাতিঘর
দূর করে ভয়, বলে- সামনে এগিয়ে চলো।
আমি তখন গায়ের চাদরটা টেনে
চুপচাপ একা গুটিসুটি হয়ে বসি
মাঝরাত; বাস তখনো চলেছে ছুটে
আমি চোখ বুজি, ঠোঁটে মুচকি হাসি।
মনে পড়ে এক এমনই পুরনো রাতে
পাশে ছিলো কেও একঘেয়ে সেই পথে
চোখে ছিলো কিছু রঙ্গিন স্বপ্ন আঁকা
আর ছিলো কিছু নরম হাতের ছোঁয়া,
সেদিনও এমন ছুটে চলা এক বাস
ছুয়েছিলো; পার করেছিলো সেই খেয়া
মনের নদীর একূল ওকূল ছুয়ে
হয়তো সেদিন হয়েছিলো নেওয়া দেওয়া।
তবুও সেদিন দু'পারের কোলাহল
ছিলো নিশ্চুপ, দেয়নি তো কেউ সাড়া,
যাত্রা শেষে দুজনই দু দিকে গেছি
চেনা পথ তবু দুজনই পথ হারা।
তারপর আরও কত দিন গেছে চলে
আজ রাতে ভেবে মনে মনে পায় হাসি
মাঝরাত; বাস তখনো চলেছে ছুটে
আমি চুপচাপ গুটিসুটি হয়ে বসি।
-২৭/১২/১৪