আজ যারা পথে পথে,ফাটা রক্ত মাখা পায়ে,
হেঁটে চলে আপন গন্তব্যে,তাহারা মানুষ নয়।
মানুষের মতো,সমাজ যাকে মজদূর বলে,
তাদের ব্যথা বোঝার জন্যে ,কেউ কি আছো?
ভিন্ন রাজ্য হতে,এখন পালিয়ে যাওয়ার সময়,
সেটা যে ভাবেই হোক,অন্ধকারে বা আলোতে,
চলতে তাদের হবেই,দৃঢ় সংকল্পে বদ্ধমূল এরা,
এক মুঠো ভাতের জন্যই তো আসা,কিন্তু না!!
সে ভাতে,মারণ রোগ বিষ মিশিয়েছে,চুপিসারে।
জীবনের সব স্বপ্ন ফেলে রেখে,পথচারী এরা,
পথে পথে রেখে গেছে,কান্ত পায়ের পদধূলি,
সে যে শুধু ধূলি নয়,বেঁচে থাকার নিত্য সম্বল।
মায়ের কোলে বোন,হাতে দুটি ব্যাগ,শান্ত চোখ,
পিছু হতে ছেলেটা বলে ওঠে,আর কতো দূর মা?
মা বলে এইতো আর একটু,মা জানে বহু দূর বাকি,
এই শহরের পথে এঁকে গেছে তারা,রক্তে পদচিহ্ন,
সে পদ ফিরবে কি আর,এই শহরের ফুটপাতে?
রেল লাইনে পড়ে থাকা রুটি,ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ,
ছবি আঁকে পরিযায়ী শ্রমিকের,আত্মজীবনীর।
যাওয়ার পথে,পেটে দেয়ার মতো কিছু ছিল না,
খালি পেটে চলেছে হয়তো!যেন সাহারা বালুকায়,
একফোটা জল নেই,তবুত্ত বাঁচার নিদারুণ ইচ্ছায়,
কেউ পৌঁছেছে নিজ গৃহে,নতুবা পথেই গিয়েছেপ্রাণ।
যে প্রানের মূল্য শুধু,শ্রমিক হিসাবে পাওয়া যাবে,
যে পাওয়ার যন্ত্রণা,অতি তিক্ত জ্বালাময় গরল,
পৃথিবীর মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে,এরাই হয়তো,
নীলকন্ঠ রূপে,পান করেছে সভ্য সমাজের বিষ।
চেয়ে দেখি শান্ত নিঃসঙ্গ শহর,একা বসে কাঁদে,
নেই কোন কুলি,শ্রমিকের হট্টোগোল,নেই হকার,
সব আজ পরিশ্রান্ত,শুধু পড়ে আছে স্মৃতি কথা।
এই শহরের হয়েছে কি?যেন অজগরের ফাঁদে,
বন্দী মানব জীবন,শ্বাস রুদ্ধ অবলা অসহায়,
যার গলে দড়ি নাই,অথচ নিজ গৃহে বাঁধা,
আজ একলা মানুষ,একলা কাঁদে,পাশে নেই কেহ,
তবুও হেথায় বাঁচতে হবে,পাশে রেখে মৃতদেহ।