*সাগরিকা*

---- তন্ময় দে বিশ্বাস ---

সেদিন পৌষমাস -
গোধূলিবেলায় সাগরের পাড়ে
রক্ত বসনে বজ্রাসনে উপবিষ্টা এক নারী -
উরুপৃষ্ঠে সাধন ভঙ্গীমায় প্রশস্ত দুই হাত -
উদ্ধতশিরে একদৃষ্টে দৃষ্টি নিক্ষেপিত দিগন্তরেখায়-
দূর থেকে মনে হয়, কোনো এক যোগিনী
তন্ত্র জাল রচনা করে চলেছেন সমূদ্রবাসনায়-
সমূদ্রের প্রতিটা ঢেউ থেকে তরঙ্গায়িত এক রশ্মি
বারবার আছড়ে পড়ছে সেই তাপসিনী দেহে -
বারবার বারবার আলোক উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে
সেই যোগিনী মুখাবয়ব -
যেন সাগর তার অন্তরস্থিত সমগ্র তেজসমূহ বিকিরণ করে
উজ্জীবিত উজ্জ্বল করে চলেছে সেই নারীকায়া,
যেন সমূদ্র তার সমূহ জ্যোতিকিরন দিয়ে নিবেদন করে চলেছে তার প্রেম-
রমনীমনজিগীষায়-
প্রতিটা ঢেউ যেন পায়ে আছড়ে এসে জয় করতে চাইছে সেই রমণীচরণকমল,
এক অপূর্ব আলোকবৃত্ত রচনা হয়েছে সেই রমণী শরীর ঘিরে -
হঠাৎ আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হলো কাঁসর ঘন্টার আওয়াজ, উলুধ্বনি শঙ্খধ্বনি -
দিকচক্রবালে দেখা দিলো চন্দ্রোদয় -
নিমীলিত চক্ষু উন্মেলিত হলো সেই তেজস্বী রমণীর -
উন্মোচিত অক্ষিগোলক নয়নতারায় চাঁদের প্রতিচ্ছবি -
আকাশের চাঁদ আর সমূদ্রবেলার মানবী চাঁদ
আজ মিলেমিশে একাকার -
আমি খুঁজে পেয়েছি আমার বহু আকাঙ্খিত সেই কামনার চাঁদকে-
সাগরের পাড়ে যোগিনীর বেশে তাপসিনী সে এক নারী --।