*** বেলাশেষে ***
----- তন্ময় দে বিশ্বাস -----
নদীর ধারে কদম গাছটার পাতার ফাঁকে,
উঁকি মারছিলো চতুর্দশীর চাঁদ,
যেন মেঘের কোলে ভেসে-
কদম গাছের ডালগুলোকে ভালোবেসে
জড়িয়ে ধরছিলো একান্ত আবেগে,
একটু দূরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে,
একটা বালির পাহাড়,
পাহাড় বললে ভুল হবে, আসলে টিলা,
চাঁদের আলোয় আকাশের অনেকটা দখল করে,
দাঁড়িয়ে আছে মাথা তুলে,
তাকে পাহাড়ের মতোই লাগছে অবশ্য,
অনেকটা দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে নদী,
নদীর প্রবাহ, নদীর কল্লোলিনী স্রোত,
অনেক দূরে শুরুর শুরুতে শুরু হয়ে
আরো দূরে শেষের শেষে মিলিয়ে যাচ্ছে গতি,
মাঝখানে চাঁদ, কদম আর আমি,
থমকে দাঁড়িয়ে,
অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যত
একটা পাতায় দেখতে পাচ্ছি চাঁদ,
দূরে, নদীর শুরুতে যেন আমাদের অতীত স্মৃতি,
মনের আঙিনা জুড়ে পাহাড় হয়ে-
আকাশের অনেকটা কেড়ে নিয়ে,
জোৎস্না মেখে দাঁড়িয়ে আছে,
তাকে অস্বীকার করার ক্ষমতা আমাদের নেই,
আজ তুই আলো হয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছিস-
আমাদের বর্তমানের শাখা প্রশাখায়,
কদমগাছটা যেন আমাদের শরীরী প্রতিকী,
বাস্তবের ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
স্বীকার করছে তোর অস্তিত্ব,
দেহের পরতে পরতে তোর মায়াবী স্পর্শ,
যেন প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে উপভোগ করছে,
ভালোবাসার আলিঙ্গনে,
আর তোর প্রতিচ্ছবির হিল্লোল তুলে
সময় হয়ে, নদীজল বহে চলেছে ভবিষ্যতের মোহনায়,
তোর বহে চলা যৌবন স্রোতে সম্বল শুধু
আমার দৃষ্টি, দূর থেকে দূরান্তে,
অসীমে অনন্তে,
আমাকে তোর ভবিষ্যতের সঙ্গে, কামনার স্রোতে
ভাসিয়ে নিয়ে যাস চাঁদ,
আমি অনন্তে ভাসতে চাই তোর সাথে
মেঘের ভেলায়, কলঙ্ক হয়ে--।