হাজারটা বিপ্লব শেষ হয়েছে, শেষ হয়েছে বহু প্রাণ
তবে শেষ হয়নি তাদের আত্মার অবশেষ ম্লান গলায় আজও গায় দ্রোহেরই গান।
দ্রোহ বেঁচে আছে, দ্রোহ বেঁচে আছে জেলখানায় বন্দী এক কয়েদির লেখা দিনলিপির ১৩১ নাম্বার পাতার মুক্তি লাভের কল্পনায়
দ্রোহ বেঁচে আছে তার মায়ের অন্ধ চোখে মেঘ হয়ে জমা জলের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায়।
সে বেঁচে আছে একটি শিশুর বাবাকে ছাড়া কাটানো আরো একটি ঈদে,সে বেঁচে আছে এক গৃহবধূর স্বামীহীন নিঃসঙ্গ রাতে।।
দ্রোহ বেঁচে আছে, দ্রোহ বেঁচে আছে হিমশীতল মর্গের রক্তভেজা মেঝেতে হামাগুড়ি দেওয়া স্বপ্নে
দ্রোহ বেঁচে আছে এক তরুণের বুলেট বিদ্ধ করোটিতে।
সে বেঁচে আছে এমন শখানেক মৃতদেহের সদ্য মুক্তি পাওয়া আত্মার জীবিত বিবেকে।।
দ্রোহ বেঁচে আছে, দ্রোহ বেঁচে আছে কোনো এক ২৯শে সেপ্টেম্বরের অপেক্ষায় থাকা প্রেমিকের কেলেন্ডারে
দ্রোহ বেঁচে আছে সংকীর্ণ গলিতে হঠাৎ হাতধরা আর আনকোরা চুম্বনে
দ্রোহ বেঁচে আছে নবযৌবনের স্রোতে ভেসে গিয়ে করা কিছু ভুলে
বেঁচে আছে সে প্রেমিকার নগ্ন পিঠে আছড়ে পড়া ভেজা চুলে।।
দ্রোহ বেঁচে আছে তোমার আমারই মাঝে কখনো চায়ের কাপে রাজনীতির ঝড় তুলে কখনোবা রাজপথে তারুণ্যের আগুন জ্বেলে
কখনো রাজমিস্ত্রীর ধুলোমাখা হাতে তামাকের ঘ্রাণ হয়ে কখনোবা কৃষকের কপালে জমা ঘামে স্বস্তির বৃষ্টি হয়ে।
দ্রোহ বেঁচে আছে সবার মৃতপ্রায় বিবেকের কোনো এক কোণে,দ্রোহ বেঁচে আছে প্রিয় সঙ্গী আঁধারকে শোনানো আমার এই গানে।।
তাই আজও আমি দ্রোহেরই গান গাই,আমার নিষ্পেষিত নকশাল মনের বিমূঢ় অনুভূতিকে বিপ্লবের বিমূর্ত ছবি দেখিয়ে বলি "দ্রোহ বেঁচে আছে, সে মরে নাই"।।