কেউ মনে রাখেনি, পঁচিশটি দশক গত হল,কেউ মনে রাখেনি
প্রথম যৌবনে এক ষোড়শী ছলাৎ ছলাৎ চোখ বন্ধ করে দিয়ে বলেছিল
ভরা পূর্ণিমায় তার রহস্য দেখাবে আমায়
তারপর কত চাঁদ শূন্যতা থেকে পূর্ণতা পেল,
কিন্তু সেই ষোড়শী আর আসেনি
দশটি বছর অপেক্ষায় আছি।
মামা বাড়ির জেলে রহিম আলী বলেছিল,
বড় হও ভাগিনা, তোমায় আমি লাল শাপলার বিল দেখাতে নিয়ে যাব।
যেখানে মনি একপাশে রেখে সাপেরা সর্পিনীর সাথে মিলিত হয়
রহিম আলী,আমি আর কত বড় হব?
সর্পিনীর নৃত্য দেখার বয়স ফুরোলে
তবে কি তুমি আমায় লাল শাপলার বিল দেখাতে নিয়ে যাবে?
একটাও ক্যাসেট প্লেয়ার কিনতে পারিনি
একহাতে কালো স্যুটকেস আর অন্য হাতে রমণীর হাত রেখে ছুটেছে
মৃধা বাড়ির ছেলেরা
অভাগার মতন তালুকদারদের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে শুনেছি ভেতরের নীল উৎসব।
অসম প্রস্ফুটিত লালশাড়ী পরা সুন্দরী রমণীরা ভীষণ আনন্দে মেতেছে
আমার দিকে তারা ভ্রুক্ষেপও করেনি।
মামা আমার পিঠ চাপড়ে বলেছিল,দেখিস একদিন আমরাও
সেই মামা এখনও কুমার
আমাদের ছোঁয়া হয়নি কিছুই
সেই ক্যাসেট প্লেয়ার,সেই নীল উৎসব আমায় কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবেনা।
একটাও রুমাল কেউ দেয়নি
"ভুলোনা আমায় লেখা"
একটাও ফন্ট তৈরি করা হয়নি
কারো নামের সাথে মিল রেখে।
কোমড়ে এক আধ-পুরনো রুমাল লুকিয়ে
চারুলতা বলেছিল
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালোবাসবে
এই স্থান ও পাত্র সবই তোমার।
সেই ভালোবাসার জন্য আমি কি-ই না করেছি?
চৌধুরীদের মোটা কুকুরগুলোর কত তাড়া খেয়েছি
তবুও ঐ বাড়ির গোলাপগুলোই এনেছিলাম তার জন্য।
তবু মনে রাখেনি চারুলতা
এখন তার কোমড়ে কলসি,পুত্রসন্তান অথবা আঙ্গুলের ছাপ
এখন সে পূর্ণতম এক নারী
কেউ মনে রাখেনি
পঁচিশটি বসন্ত কেটে গেল
কেউ মনে রাখেনি, কেউ মনে রাখেনা।