চলছে ব্যবচ্ছেদ।
ফর্মাল্ডিহাইডের উৎকট গন্ধ মেশা বাতাস-
ম্যানোমিটারের কাঁচে ওঠানামা করা অক্সিজেন-হ্যালোথেনের কাঁটা;
আর একঘেয়ে কৃত্রিম ফিসফাস ।
ফরসেপ, কাঁচি আর মসকুইটোর টুংটাং;
আর শুধু একঘেয়ে কৃত্রিম ফিসফাস।
পঞ্চাশ ক্যালিবার বুলেটে যেন বিধ্বস্ত মুখমণ্ডল;
কেউ কি চিনবে এখন তাকে?
কি তার নাম? তার পুরনো পরিচয়ে-
স্ত্রী-সন্তান, যারা চিনেছিল কয়েকযুগ;
তারাও কি চিনবে ভুল করে আজ এই ঘরে?
পালস অক্সিমেট্রির তরঙ্গে জানান দেয় সে -
"বেঁচে আছি এখনো আমি! যাইনি এখনো মরে!"
চলছে ব্যবচ্ছেদ।
ক্ষতবিক্ষত কপোল কিংবা স্কন্ধের এককোণে-
চুইয়ে পড়া রক্ত ভিজিয়ে দেয় ধবধবে ড্র্যাপিং চাদর।
ছুটে চলে সতর্ক ডায়াথার্মি- আঙুলের নিপুণ মোচড়;
চড়চড় শব্দে ভেঙে চলে নিঃস্তব্দতা-
কুণ্ডুলী পাকানো কালচে ধোঁয়া-
আর চর্বিপোড়া তেলের উৎকট গন্ধ!
বিষাক্ত মাংসপিণ্ড, লসিকার থকথকে গ্রন্তি;
স্তুপ হয় একে একে- অভিশাপ দিতে দিতে,
নাগিনের লাশের মত পড়ে থাকে অবহেলায় একপাশে ;
সতর্ক চোখ তবু খুঁজে চলে-
খুঁজে বিষাক্ত শেষ কোন কণা;
খুঁজে বেড়ায় গভীরে-
অনেক-অনেক গভীরে
কোথায় শেষ এর সীমানা?
একসময় যখন জেগে উঠবে সে;
বদলে যাবে তার চিরচেনা চারপাশ।
দীর্ঘায়িত হবে সেই পুরনো প্রতীক্ষা;
হয়তো বছর পাঁচেক কিংবা দশ ;
কিন্তু তারপর? আবারো কি একবার?
আবারো কি এই ব্যবচ্ছেদ?
বিধ্বস্ত হৃদয়ে চলছে ব্যবচ্ছেদ-
চলছে হৃদয়ের ব্যবচ্ছেদ।