প্রচন্ড ঠান্ডায় কাঁপুনিতে দোলে দেহ
দাঁতে দাঁত বাড়ি খায়, বইছে শৈত্য প্রবাহ ।
উষ্ণতার আশায় আগুনের লেলিহান শিখায়-
উত্তপ্ত চারপাশে গোল হয়ে মানুষ ; বসে বা দাঁড়ায় ।
সেলসিয়াস স্কেলে তাপমাত্রা দশ ডিগ্রীরও নীচে
কোথাও হয়ত পাঁচ চার তিন ডিগ্রীতে পৌছে !
কনকনে শীতে মানুষগুলো অসহায়
ঠান্ডায় কষ্ট পায় ; শীতের রাতের নির্মমতায় ।।

ধনীদের কভু কাবু করে না কনকনে শীতে
লেপ-তোষকের পরম আদরে উষ্ণ চাদর পরিহিতে ।
গরীবের রক্তশুষে উষ্ণ চাদর বোনে ঐ দানবরা
পরম নির্ভরতায় আরাম বিছানায় শীতের রাতে গভীর ঘুমে ওরা ।।

পাতলা চাদরে অনাবৃত দেহ আবৃতের বৃথা চেষ্টা
উষ্ণতার প্রয়োজনে আগুনের আয়োজনে নির্ঘুম রাতটা ।
কনকনে পবন টনটন করে তোলে হাড়-জিরজিরে দেহে
শিরশিরে অনুভূতি ছড়ায় শরীরে শীতের প্রত্যাহে ।
দারিদ্রের অভিশাপে তোষক কেনার সামর্থ্য কোথায় !
তাই, নীরবে পিষ্ট হয় শীতের রাতের নির্মমতায় ।।

দুখীর ব্যাথায় সমব্যথী হয়ে নানান সংগঠন
লেপ-তোষক কম্বল বিলানোর করে আয়োজন ।
পরদিন কাগজের পাতায় বড় বড় শিরোনাম
অমুকের আয়োজনে তমুকের শীতবস্ত্র প্রদান ।
চ্যানেলে চ্যানেলে হেডলাইন, দুখীর পাশে আমরা
আমাদের দেখে দেখে শিখুক অন্যরা !
নিজের ঢোল নিজেই পেটাতে ব্যস্ত, অভ্যস্ত হাতে
কনকনে শীতে রসিকতায় লিপ্ত দুখীর সাথে প্রতিরাতে ।
এত আয়োজন করে দেবার দরকার কি !
ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ছবি তোলারই বা প্রয়োজন কি !
যতসব চোট-বাটপার মহৎ সাজার জন্যে-
এত বাহারী আয়োজন সৃষ্টি করে এই জনারণ্যে ।
লজ্জা করে না, মেতে উঠতে এমন রসিকতায় !
বস্ত্রহীন মানুষদের সাথে উষ্ণ চাদর প্রদানের এই নির্মমতায় ।।

শত শত সংগঠন কত শত মহৎ ব্যাক্তি
কত শীত বস্ত্রই তো প্রদান করলেন দেখি !
তবে কেন আজও রাজপথে পাতলা চাদরে
লাখো মানুষ পড়ে আছে চরম অবজ্ঞায়, অনাদরে ।
খবরদার বলছি এমন নির্মমতায় মেতে উঠো না !
শীতের রাতের কষ্টকে আরও বাড়িয়ে তোল না ।
যদি পার তো যাও ঐ কাতারে কাতারে
ঘুমন্ত মানুষগুলোকে ঢেকে দাও উষ্ণ চাদরে ।
ঘুম ভেঙ্গে যেন জল ভরে উঠে নয়নের কোণায়
একটু প্রশান্তি যেন পায় ; এই শীতের রাতে এমন নির্মমতায় ।।

১০/০১/২০১৩  ইং ।

_____####________