গান্ধী থেকে ম্যান্ডেলা, লুথার কিং থেকে বেলাল
কালের স্বাক্ষী ; কৃষ্ণবর্ণের উষ্ণ উদারতা সুমহান চিরকাল ।
শান্ত-সৌম্য নম্রতার চাদরে উজ্জলতার প্রতীক তাঁরা
মানবের মানবতা চেনাল নতুন সাজে, শেখাল জীবনধারা ।
মাতা নহে তাদের কোন শ্বেত-শুভ্র গৌর বর্ণ নারী ;
নির্মল মহানুভবতার, রুঢ়তার অসাঢ়তার দীক্ষা দিল জন্মদাত্রী কৃষ্ণসুন্দরী ।

কালো, অসীত, শ্যাম বলে তোমারে খোঁটায় কে ?
সম্মুখে আন ; নির্বোধ-মূর্খ, অজ্ঞ-অধম, নচ্ছর হতচ্ছড়াটাকে ।
দীন-হীন জ্ঞানে মূর্খজনে দূর্বোধ্যে ; বিধাতা দানিত তোমার ঐশ্বর্য্যে
নিশিতের অমানিশায় বিকশিত সৌন্দর্য্য, নিহিত তোমার শৌর্য্যে ।
বোঝে না বলে তোমারে খোঁচায় ; বলি, শোন গো কৃষ্ণসুন্দরী
দানিয়াছে তোমারে স্বয়ং বিধাতা, মনোরম-শোভাময় করি ।

গাত্র-বর্ণে পাত্র কুঞ্চনে মনে কি তোমার ব্যাথা ?
সয়তে পার না, কন্যাদায় বিদ্ধস্ত পিতার কাতরতা !
তোমারে বোঝে সাধ্য কি ! নরাধম পাত্র-মহাশয়ে
ধরনী দেখার ভঙ্গী যে তার চোখে কালো চশমা পরিয়ে ।
অভাগা-অপদার্থ সে, কালো-নীচতা হৃদয়ে ভরি
চেনে না তোমায় ; তাতে কি ! তুমি তো স্বরুপে অপরুপা কৃষ্ণসুন্দরী ।

কোলাহল কর্মচঞ্চল ব্যস্ততা আর আলোকাজ্জল দিনের শেষে
জুড়োয় মন-প্রান, কুড়িয়ে প্রশান্তি-বিশ্রাম কালোরাতে এসে ;
নির্জনতা নিস্তব্ধতা কালো রাত্রির ঘোর অমানিশায়
পরম শান্তি পরম প্রাপ্তি ; ধবল দিনের পর নিশির মায়ায় ।
ধরনী জুড়ে রজনী আছে কৃষ্ণরুপ ধরি
নিশিতের মাঝে অসীত সাজে কৃষ্ণসুন্দরী ।

কালো বলে নিজেরে ছোট ভেব না, দেখো না অবহেলে
আপনারে বিদ্ধ করো না বেদনার নীলে ; তোল না নিজেরে শূলে ।
ছায়া কালো, নিশি কালো ; কালো যে দুনিয়াজুড়ে
সাদা-কালো পাশাপাশি মিশে প্রকৃতির রহস্যের ভিড়ে ।
বর্ণের লাগি মানবের মান, কভু হয় না পাল্লা-দাড়ি
গৌরের পাশে সমান মহান মহীয়সী কৃষ্ণসুন্দরী ।


______######__________