মা,
এ পৃথিবী যেমন দুর্বল, অসহায়, অক্ষম, অশ্রুকাঁতর একজন নারীকে দেখতে চেয়েছিল
আমি তেমনটি হতে পারিনি
এ পৃথিবী যেমন একজন ভঙ্গুর হয়ে নুইয়ে পরা নারীর পাশে এসে করুণা দেখাতে চেয়েছিল
আমি তেমনটি হতে দেইনি
এ পৃথিবী যেমন নারীদের কষ্ট পাওয়াকে, সহ্য করতে পারাকে এক নিরলস স্তিতি মেনে নিয়েছে
আমি তেমনটি গ্রহণ করতে চাইনি
এ পৃথিবী যেমন নারীদের অপমানিত হওয়াটাকেই স্বাভাবিক ধারা করে দিয়েছিল
আমি সেই ধারা ছিন্ন ভিন্ন করতে চেয়েছি, করছি
তবে, সময় অসময় আমিও তো অসহায় হয়ে খোঁদার দরবারে হাত তুলি
ক্ষণে ক্ষণে বিচলিত হয়ে আমিও তো অশ্রুজলে সিক্ত হই ভীষণভাবে
বিষাক্ত, হিংস্র মানুষ কিংবা অমানুষের ছোঁবলে আমিও তো মৃতপ্রায় হয়ে পড়ি
আমিও তো স্নেহ চাই, অসম্ভব ভালবাসার কাঙ্গাল হই
তবে, কষ্টের ভয়াবহতা আমাকেও তো কুত্সিত এক বিচিত্র আঁধারে ঘিরে
গ্রাস করে ফেলে
অথচ দেখ,
কেউ এই আমাকে খুঁজে পায়না
কেন?
আমি সত্যি বুঝিনা
হয়ত, এতেই সুনিশ্চিত মঙ্গল!
জানি ভেঙ্গে পড়ার আগে মৃত্যুর শেষ তৃষ্ণা পর্যন্ত
আমিতো লড়াই করেই যাব,
জানি অসহায়ত্ত্ব কোনও মানুষের সামনে বরণ করার আগে
আমিতো মৃত্যুকে আলীংগন করব;
তাইতো,
ওরা বোঝেনা, আমি তোমার যোগ্য সন্তান হতে চেষ্টা করেছি
লড়াই করতে চেয়েছি,
অনুধাবন করাতে চেয়েছি
আর তাইতো,
ওদের চোখে আমি এক অপরিপূর্ণ নারী
তাইতো,
ওরা বোঝেনা, শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তার কাছেই আবেদন করা যায়
মাথা নুইয়ে প্রার্থ্না করা যায়
ওদের কাছে নয়
তাইতো,
ওরা বোঝেনা, সহ্য করার গতি, তীব্রতা তখনও যেমন নারীর ছিল
আজও তা রয়েছে
তবে আজ তা ভিন্ন রুপ ধারণ করেছে বুঝি,
তাইতো,
এ পৃথিবীর বুকে নারীদের অপমান করতে পারার বীরত্ব তো,
সেদিনও যেমন ছিল , আজও তেমনি রয়েছে, আর এমনি রয়ে যাবে,
তাইতো, আমি বলে বলে, বুঝিয়ে বুঝিয়ে
ক্লান্ত! ভীষণ ক্লান্ত!
মা, ওরা কেন বোঝেনা
অসাধারণ নারী রাও অতি সাধারণ এক নারী।
১৩ই সেপ্টেম্বর'২০১৩, ভোর ৬ঃ১৪