ছোট ছোট পায়ে হেঁটে ভীত হরিণী চলেছে
কেমন যেন থমথমে এক নিরবতা চারিদিকে
জংগলের ফাঁকে ফাঁকে , ভাঁজে ভাঁজে কেমন এক উদাসীনতা
এক প্রলয়ংকারী বিভত্স ঘূর্ণিঝড় আসার পূর্বাভাস বুঝি
সারাবনে যে দাপট নিয়ে ঘুরে বেড়ায়
সেই সে রয়েল বেঙ্গল ডোরাকাঁটা বাঘ কেন যেন নিশ্চুপে বসে
এক যুগল অশ্রুকাতর চাহনি , অদ্ভূত মৌনতা
দিন গুনে যাচ্ছে যেন এক আনন্দহীন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে বুঝি
প্রতিটা প্রাণে মৃত্যুভয়
নিরীহ নিশ্চুপ নিশ্প্রাণ সব্গুলো হৃদয়
যেন কোনও এক পৈশাচিক শক্তির অবতোরণ ঘটেছে
যেন প্রতিটি কণাকে ধূলিস্যাত করে দিতেই ব্যস্ততায় রয়েছে
যেন বনের প্রতিটি বৃক্ষের ভালবাসায় ছড়িয়ে থাকা
যতগুলো আলোকিত জীবন রয়েছে
সবকিছু ধ্বংস না করে ক্ষান্ত হবেনা সেই সে বুভুক্ষের দল
হায়েনারাও কম্পিত হয়ে থরথর করে কাঁপছে
এ কোন বিদঘুটে কদাকার এক নরপশুর দল হানা দিতে যাচ্ছে?
সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে তালে যে উন্মত্ত হওয়া আনন্দের জোয়ার
ভেসে আসত এ সুন্দরবনের কোল ঘেসে
ছড়িয়ে দিয়ে যেত সমস্তটা অদম্য ভালবাসা
শ্রদ্ধায় আলোকিত নদীপথে জ্বল্জ্বল করত জোনাকিগুলো
আজ কেন সবাই নিশ্প্রাণ , অন্ধকার গহবরে ঘাপটি মেরে
হতবাক দৃষ্টিতে শুধুমাত্র খোদা' তা'লার প্রতি আহ্ববান জানিয়ে যাচ্ছে?
খোদা'তা'লার সৃষ্টির প্রতি অবমাননা
এ কোন অভিশাপ !
এ কেমন অবিচার!
এ কোন অশান্ত স্রোতধারা ?
এ কোন রক্তাক্ত হাতের খুনীরা ?
কি এমন দোষ এতগুলো নিশ্পাপ প্রাণের?
কি এমন উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাবে বাস্তবতা?
কেন বিবেকের রন্ধ্রে এখনও নাঁড়া পড়ছেনা সুক্ষ্ম ভালবাসা?
কেন হৃদয়ের দাঁড়ে এখনও আগত হচ্ছেনা ন্যূনতম মনুষ্যত্ববোধ?
এ কেমন অভিশাপে
তাঁদের চোখ, নাক, বিবেক-বুদ্ধি, জ্ঞ্যান, আবেগ
সবকিচু পিচঢালা কালো কয়লার পথে হেঁটে চলেছে?
এ কেমন অভিশাপে
তাঁদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছেনা
বরং রক্তাক্ত হচ্ছে তাঁদের প্রতিটি হাত, তাঁদের প্রতিটি পৈশাচিক আত্মা?
এ কেমন অভিশাপ!
একি সুন্দরবনের অভিশাপ?
নাকি স্বয়ং বিধাতার ?
৪ই সেপ্টেম্বর '২০১৬ , সন্ধ্যা ৬ঃ০৭