সপ্তাহখানিক পূর্বে গিয়েছিলাম পদ্মার জলপাড়
সাথে একটা নৌকা ছিলো ছাউনিযুক্ত পাল তোলা
ছিলাম মোরা বেশ ক'জন মাঝির সাথে তার সাহায্যকারীও
প্রতিচ্ছবি বন্দি করা যন্ত্রটিও লয়ে ছিলাম সাথে ক্ষণগুলোকে স্মৃতি করতে
শখ তো হয় বুড়ো হয় নি এখনো কেবল মাত্র পেড়িয়েছি ঊনিশ বা কুঁড়ি।
মাঝ নদীতে পেটে টান পড়ে ক্ষুধায় যেনো মরি মরি
বন্ধুদের বলতেই হা হা হি হি হ হ শব্দে মেতে উঠে
আমি মরি পেটের জ্বালায় বন্ধুরা সব তামাশা বানিয়ে তুলে
বন্ধু বলে কথা মাঝ নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলতেও পারি না
মাঝির সাহায্যকারীর কাছে ছিলো চিড়া কিছু খেজুরের গুড়
বেচারা মায়া করে এনে দিলো চুপ চাপ খেয়ে নিয়ে প্রশান্তি অনুভব করি।
জলের পাড়ে দোকানের লম্বা একটা সাড়ি দেখছি খুব কাছাকাছি
আমরা তাড়াহুড়ো করে নৌকা থেকে দৌড়ে নামি দেখতে অপরূপ দৃশ্য
মাঝি ভাইকে সন্ধ্যাকালের প্রহর বলে আমরা বেরিয়ে পড়ি ঘুরাঘুরিতে
কারণ ইচ্ছে ছিলো রাত্র পাড়ি দিব নৌকায় যখন বাসায় ফিরতি যাবো
যেই কথা সেই কাজ বন্ধুরা যেখানে ভয় কিসের সেখানে মনে তা জাগে।
বাজার পেরিয়ে চল্লিশ কিংবা পঞ্চাশ কদম হবে লম্বা বস্তির মত সারি সারি বাড়ি
হঠাৎ মাসুদ বলে উঠলো চল তারেক দেখি আসি রহস্যটা কি
পাশের এক মধ্য বয়ষ্ক লোক কথা শুনে বলল নতুন নাকি পাড়ে?
ঘুরতে আসছেন ঘুরেন বেশি নড়াচড়া কইরেন না পরিবেশ ভালো না
তার কথা কিছুই না বুঝে মাসুদ আমি রওনা হলাম ঘেটে ঠক ঠক আওয়াজ দিলাম।
ভেতরে ঢুকে অবাক ছাড়া কিছু হবার নয় টেবিল পেরে বসে আছে নরকনারী
হৈমন্তি নামের এক মেয়ে বলে উঠলো কি মশাই লাগবে নাকি কচিকাঁচা মরিচ?
কয়েকটি ঘর পাড়ি দেওয়ার পর বের হলো মুখে ম্যাকাপ পড়া বিশ্রী দেখতে নাম রাণী
দেহ যেনো নগ্নতায় ভরা আগে আসিনি কখনো প্রথম চাহনীতেই ধরে ফেলে
বিমলা নামে এক মেয়ে কাছে এসে একটানে দু'জনকে ঘরেটেনে তুলে।
মাসুদ আমার থেকে চালাক আমি কিছুটা ভীতু
বিমলা অন্যসব মেয়েদের মত না যদিওবা নরকপথিক কিন্তু আলাদা
জল খাবার দিলো পাশে ইতস্ত বোধ করছি দেখে মেয়েটি ভাই ডেকে বলে
আমার মনটা খুব নরম ভাই বলিলে খুব কাছে নেই আপন করে
মেয়েটিকে দেখে খুব মায়া হলো তাই খাবারটা নষ্ট না করে শেষ করি যতনে।
পতিতা বলি যাকে মন প্রাণ তাদেরও থাকে শুধু বাঁচে নরক রূপে
বিমলা আর তাদের সাথীদের গল্প শুনতে ছিলাম মানে বসেছিল আসর
তাদের এত দুঃখ কষ্ট বেদনা কিচ্ছু জানতাম না যদি আজ বিমলা না হত
তার পরও তারা হাসতে জানে অন্যকে ভালোবাসতে জানে জানে আপন করতে
বেশ ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছিলো পতিতা পল্লী নিয়ে যেটা ছিলো জল পাড়ে।
আজ তাই বলে যাই যাদেরকে রাতের খাবার বানাও দিনে কেনো থু থু দাও?
অসম্মান কেনো করো তাদের?কি ভূল করেছে তারা? অন্যায় কি তাদের?
তাদের এই পথ বেছে নেওয়ার পিছনে তোমাদেরি তো হাত
মনে পড়ে বাসে ট্রেনে লঞ্চে কুকুরের মত ছিড়ে ছিড়ে খেয়েছিলে
কোথায় যায় তারা? কোন পথ নেয় বেছে? কোথায় রাত্র যাপন করে?
কোন সমাজ মেনে নেয় তাদের? কে করবে তাদের বিয়ে?এই পাঠক তুমি করবে?
তাহলে কেনো তাদের নিয়ে করো কুরচনা? কেনো তাদেরকে নিয়ে এত মাথা ব্যাথা?
বাচঁতে দাও তাদের মত, জীবনটা তাদেরকে তাদের মত কাটাতে দাও
ওরা তো আমাদেরি বোন অনেক যন্ত্রণাময়তায় তাদের জীবন ঘেরা
বিমলাকে আমি আজও মনে রাখি ভাই বলে আপন করেছিল বুকে।