কই, দুদিন আগেও তো স্বপ্নের মতো চলছিল জীবন,
এখন কেন হাসপাতাল আর বাড়ির মধ্যে
এমন টানাপোড়েন?
মাঝখানে শয্যা—অনিচ্ছার এক নীরব বন্ধন।
ওষুধের বোতল, পাতার-পাতা অ্যান্টিবায়োটিক—
এরা সবাই এখন আমার শাসনকর্তা।
এই যে নিয়ম করে তিনবেলা ওষুধ গিলতে হয়,
বিষের মতো লাগে—বলো তো, ভাল্লাগে এসব?
ঘুমের আগেই ঘুমানোর চেষ্টা,
অথচ চোখের পাতা ভারী হয় না;
এমন কোনো নিয়ম বা রুটিন তো আমি লিখিনি কখনো।
একসময় সন্ধ্যায় বন্ধুরা ছিল সঙ্গ,
তাদের আড্ডায় আচ্ছন্ন ছিল সমস্ত ক্লান্তি।
এখন সেই সন্ধ্যা চলে গেছে ডাক্তারের কেবিনে,
যেখানে প্রতিটি পৃষ্ঠা শুধু রোগ আর ওষুধের হিসেব।
ইনজেকশন—একটা ছোট সুই,
তার তীক্ষ্ণতা এখন বুকের ভেতর কাঁপন তোলে।
যে বস্তু আমার ভাবনার বাইরেও ছিল,
আজ তা-ই যেন শরীরের নিয়মিত আগন্তুক।
রাতের শেষ প্রহরে মাথায় ঢালা শীতল জল—
এ-ও কি কোনো সুখের গল্প হতে পারে?
আর বিছানা, সে তো এখন আমার
অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী।
তাকে এড়িয়ে যাওয়া তো দূরের কথা,
এখন তার গহ্বরেই লুকিয়ে থাকতে হয়।
তবু, কোথাও একটা আশা লুকিয়ে থাকে—
তার সাথে আড়ি কবে হবে?
কবে এই শয্যার শৃঙ্খল ভাঙবে?
আমি তো জানতাম না, জীবন এতটাই বদলে যেতে পারে,
এতটা ঘিরে রাখতে পারে অসুখের সীমানা।
তবে এটাও জানি, একদিন এই অসুখ নামক কারাগারের
দরজা খুলে যাবে,
বিছানার সঙ্গ ছিন্ন হবে;
আমি আবার পা রাখব আমার হারিয়ে যাওয়া রুটিনে।