এখন জেনেছি দাদীর কবর এখানে কোথাও আছে
তাই ঘুরে ঘুরে আসি বারে বারে কবর গুলোর কাছে।
এতো দিন পরে দাদুর কবরে সীমানা যায় না চেনা
দাদীমার কাছে দেশের অনেক হিসাব রয়েছে দেনা।
দেশটির জন্য দাদীমার সেবা হিসাব করার নয়
দাদীমার মতো কাছে টানা মন কতজন দেশে হয়।
যতটুকু জানি দাদীর দু-কানি আশেপাশে জমি ছিল
ক্ষমতার জোরে বড় বাবু ধরে বেদখল করে নিল।
এখানেই ছিল দাদীর কবর কেউ রাখেনি সীমানা
কেউ আর তার নেয়নি খবর মুছে দিয়েছে ঠিকানা।
দুচোখের জল ফেলেছিল যারা সেদিন খবর পেয়ে
বেঁচে নাই তারা পাশে ছিল যারা অসহায় কত মেয়ে।
সকাল বিকাল সেই দিনকাল বলার মতন নয়
পাকি হানাদার কত অত্যাচার ভাবলেই লাগে ভয়।
ছিল রাজাকার ওদের দোসর মেয়েদের নিত তুলে
ঘাঁটি গেড়ে বসে অত্যাচার শেষে রেখে যেত পথে ফেলে।
ক্ষত বিক্ষত ভীষণ আহত ঘরে নিয়ে দিত সেবা
দাদীর সে কথা এখন অযথা খবর রাখবে কে-বা।
একা সেই দাদী ছিলেন দরদী সেবা দিয়ে চুপিসারে
মেয়েদের ক্ষত লাঘব করতে থেকেছেন অনাহারে।
টাকার অভাবে সেবা করতেন টোটকা ওষুধ দিয়ে
অসহায় ওরা ভালো হয়ে যেত দাদীমার সেবা নিয়ে।
নীরবে একাকী অনুপায় দাদী চুপিসারে কাঁদতেন
মেয়েদের এত সেবা দিয়েছেন দেশ ভালোবাসতেন।
শত কষ্টেও পিছপা হয়নি দাদীর সেবার হাত
বেড়ে গেল আরো মারো কাট ধরো পাকিদের উৎপাত।
দাদী অসহায় জীবনের দায় উপায় পায় না খুঁজে
ছাড়ে নাই হাল আর কতকাল মার খাবে মুখ বুজে?
বটি হাতে নিয়ে ছাউনিতে গিয়ে উঁচু করে আঙ্গুলি
রাজাকারদের ছুড়ে দেয়া গুলি উড়ে যায় তাঁর খুলি।
মাটি চাপা দিয়ে রাখলো শোয়ায়ে চলে গেলেন নীরবে
দাদী দিয়েছেন দেশটিকে সেবা মৃত্যু হয়েছে গরবে।
সত্কার তাঁর হয়নি তো আর এই শহীদি মরণে
এতোদিন পর দাদীর খবর কেউ রাখে না স্মরণে।
এক এক করে নিয়ে গেল ধরে বংশের সকলেরে
গুলি করে মেরে দিল শেষ করে জ্বাললো আগুন ঘরে।
রাখলো না আর বংশের বাতি খুশি হলো হানাদার
পাকিদের সাথে আনন্দে মাতে কুখ্যাত রাজাকার।
দিন পার হয় কেহ নাহি কয় দেশ ভরা পাপাচারে
সেই সব দিন অস্তিত্ব বিহীন দাদী জীবিত বিচারে?