আমি যদি আবার জন্ম নিই
একটি কাক হয়ে -
নির্ভীক,বেপরোয়া একটি কাক।
তোমার ঘুম ভাঙাবো
ব’সে খোলা জানলার পাল্লায়
কিংবা ছাদের কার্নিশে ।
ভোরের শিউলি মাটিতে পড়ার আগেই
ঘুম জড়ানো চোখে
তুমি শুনবে আমার ডাক;
কেউ জানতেও পারবেনা
আমি তোমার কত কাছে।
দুঃসাহসী হয়ে মাঝে মাঝে
ঢুকে পড়ব তোমার এক চিলতে বারান্দায়
বসব তোমার ভিজে শাড়ির আঁচলে
ঠোঁট ডুবিয়ে আঘ্রান নেবো
তোমার ফুলতোলা রুমালে ধুয়ে যাওয়া
ঘামের গন্ধের একটুখানি রেশ
তোমার হাত থেকে
আলতো ঠোঁটে তুলে নেব
ভোরের চায়ের আদরে ডোবানো
তোমার আধখানা এঁটো বিস্কুট
বা কুচো নিমকি।
সবাই ভাববে
একটা কাকের কি বুদ্ধি!
শুধু আমি জানব তোমায় ভালবেসেই
আমার আত্মার মুক্তি এবং শুদ্ধি -
পৃথিবীর সকলের নাকের ডগায় বসে
সকলকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে
সারাদিন নির্ভয়ে
চিৎকার করে বলতে পারব
আমি তোমায় ভালবাসি।
তোমার মা লাঠি নিয়ে তেড়ে এলে
এ দিকের গ্রীল থেকে
ওদিকের গ্রীলে গিয়ে বসব।
শেষমেশ নাস্তা নাবুদ হয়ে
হাল ছেড়ে দেবেন তিনি।
তারপর, একদিন
দয়ালু এক পরি এসে
আমার হাতে ধরিয়ে দেবেন
একটি বাঁশী,মাথায় পরিয়ে দেবেন
ময়ূরের পালকের এক মুকুট।
আমি তখন কৃষ্ণ হয়ে প্রবেশ করব
আমার রাধার অন্তরের অন্তস্থলে।
লোকে তখনো ভাববে
আমি ময়ূর পুচ্ছধারী
সামান্যএকটা কালো কাক
বই তো কিছু নয়।
শুধু তুমি জানবে
আমি তোমার
নির্ভীক প্রেমিক কৃষ্ণ;
বিগত জন্মে
তোমাকে না পাওয়ার দুঃখের আগুনে
জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া
নিকষিত কালো
এই জন্মের দুঃসাহসী প্রেমিক
একটি কাক।