বন্ধুরা, আশা কবি সকলেই ভালো আছেন।আপনাদের ভালোবাসা আর আসরের টানে প্রিতি বুধবারের মতো চলে এলাম অতিথি আলাপনে, তবে আজ একটু অন্য রকম ভাবে।সকলেই বলবেন কিন্তু আজকের আলাপন কেমন লাগলো?
তাহলে বন্ধুরা চলে আসি আজকের অতিথির কাছে। আমাদের আজকের আলাপনের অতিথি হলেন আমার আপনার আমাদের সকলের প্রিয় কবি ইথার। ।বন্ধুরা আর বিলম্ব নয় শুরু করি কবির সাথে কথোপকথন। আপনারাও সরাসরি প্রশ্ন করুন আমাদের অতিথি কবির কাছে।
প্রশ্ন (১)
নমষ্কার প্রিয় কবি। কেমন আছেন বলুন? কেমন চলছে আপনার লেখা-লেখি?
উত্তর(১)
-------------
নমষ্কার। ঈশ্বরের কৃপায় অামি বেশ ভালো অাছি।হ্যাঁ,লেখালেখি ভালোই চলছে।তবে সময়ের বড় অভাব।তারপরেও চেষ্টা করে যাচ্ছি বাস্তবজগৎের কর্ম-মুখরিত সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সাহিত্যের সাথে সম্পর্ক রাখার।
প্রশ্ন (২)
প্রিয় কবি,
অামরা অাপনাকে ইথার নামেই জানি,এটাই কি অাপনার অাসল নাম নাকি ছদ্মনাম?অাপনার অন্য কোন নাম অাছে কি?অনেকেই অাসল নাম(সার্টিফিকেট নাম) ব্যবহার করেই লিখতে ভালোবাসেন।অাপনি কোন্ নামটাকে বেশি প্রাধান্য দিবেন?
উত্তর ২
-----------------
না,এটা অামার অাসল নাম নয়।অামার অাসল নাম মোঃহাফিজুর রহমান (বিপ্লব)।তবে বাস্তবে অনেকেই অামাকে ইথার নামে ডাকে কারণ ২০১৩ সালের ১৩-ই ডিসেম্বর পরীক্ষার ল্যাবে পানি ভেবে ভুলবশত ইথার নামক অম্লধর্মী এসিড পান করার পর মৃত্যুশয্যা(কোমা থেকে ওঠে অাসার পর)বাস্তবে অামাকে সবাই ইথার নামেই ডাকে।ছদ্মনামে লেখালেখি করা দোষের নয়।এটা স্বয়ং লেখকের মানসিকতার উপর নির্ভর করে।অবশ্য অামি ছদ্মনামে লিখতে ভালোবাসি।লেখায় বিষয়-বৈচিত্রতা অানতে পারি ছদ্মনামে লিখলে।এ অাসরে অামি কয়েকটি ছদ্মনামে লিখে থাকি।তার মাঝে "অতিরঞ্জন" ও "অর্চিষ্মান" ছদ্মনামে বেশি লিখে থাকি।
প্রশ্ন(৩)
প্রিয় কবি,
আপনার জন্মস্থান, কর্মস্থান সম্পর্কে আমাদের আসরে কবিদের
যদি বলেন। আপনি আপনার নিজের কথা বলুন, মানে আপনার বাড়িতে কে কে আছেন?
তারা কে কি করেন? আপনি কি করেন? ইত্যাদি, ইত্যাদি।
উত্তর(৩)
------------
অামার জন্মস্থান বাংলাদেশের সিলেট জেলায়।সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত কাজীপুর গ্রামে অামি জন্মগ্রহণ করি ১৯৯১ সালের ১২-ই অাগস্ট । বাসায় শুধু মা অাছেন।পিতা বেঁচে থেকেও নেই।বাস্তব জগৎে অামার কোন অাত্মীয়-স্বজন নেই।পৃথিবীতে অামার মা -ই সব।তিনিই অামার পিতা,তিনিই অামার মাতা।মা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন।জন্মসূত্রে অামার কোন ভাই-বোন নেই।তবে কলকাতায় অামার পিতৃসম প্রাণাধিক দাদা "পটল বটব্যাল "অাছেন যিনি অামাকে অাগলে রেখেছেন প্রতিটি সময়ে।"রাবেয়া রাহীম"কামরুন নাহার রুনু"(বড় বুবু) অার ফয়েজ উল্লাহ রবি (ভাই)অামার অাত্মার এক-একটি অংশ।এরাই অামার বর্তমান বাস্তব জগৎের পরিবার।অামি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত বছর জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি তে বি.এসসি অনার্স(সম্মান) কমপ্লিট করেছি। এবার মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষাও দিয়েছি।রেজাল্টের অপেক্ষা শুধু....।কর্মজীবনে এখনো পা দেইনি।
প্রশ্ন ৪.
আপনার কর্ম ব্যস্ততা সরিয়ে আপনি কিভাবে কবিতা লেখেন? আপনি কখন কবিতা
লেখেন? কবিতার পাশাপাশি আপনি অন্য কি কি ধরনের লেখালিখি করেন? কবিতা
লেখার ব্যাপারে আপনার কি কি অন্তরায়? আসরের নতুন কবি বন্ধুদের ভালো কবিতা
লেখার কি কি টিপস দেবেন?
উত্তর(৪)
----------
বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় অামাকে বেশিরভাগ সময় ক্লাস ও প্রেকটিক্যাল নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতে হয়।তারওপর দু'টো টিউশনি করাই।সবকিছুর মাঝেও অামি একটু অবসর পেলেই লেখা-লেখি করি।চেষ্টা থাকে লেখা-লেখির জন্য কিছুটা সময় বের করার।অামি যত কবিতা লেখি তার প্রায় ৯০% কবিতা গভীর রাতে লিখে থাকি।বলা যায় গভীর রাতের নিস্তব্ধতা অামার খুব প্রিয়।অামি সাধারণত কবিতাই বেশি লেখি।তবে গল্পও লিখেছি কয়েকটি।এবার একটি উপন্যাস লেখার প্রচেষ্টায় অাছি।
কবিতা লেখার ব্যাপারে অন্তরায় বলতে অামি সময়কেই বলব।অামি যথেষ্ট সময় পাইনা।বেশিরভাগ কবিতা খুব অল্প সময়ে লিখে থাকি।যথেষ্ট সময় পেলে অারো ভালো করতে পারতাম।
সবাই ভালো লিখতে চায়।কবিতা তো কবির সন্তান।অামি মনে করি ভালো কবিতা লেখার জন্য বেশি বেশি অন্যদের কবিতা পাঠ করা উচিত।কবিতার উন্নয়নের ব্যাপারে একে অপরের সাথে গঠনমূলক অালোচনা করা যেতে পারে। নিজস্ব চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেকোন কবিতা পাঠ করার পর নিজে নিজে বিশ্লেষণ করাটাও গুরুত্বপূর্ণ।এতে দক্ষতা বাড়ে।অারেকটি কথা---কবিতায় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অনুশীলনমূলক হিসেবে অন্তত একশো সনেট লেখা উচিত।সনেট লিখলে ভেতরের শক্তি জাগ্রত হয়।সবশেষে,শৈল্পিক সাধনাই পারে ভালো কবিতার জন্ম দিতে......
প্রশ্ন৫
প্রিয় কবি,
অনেকে মনে করেন কঠিন শব্দ প্রয়োগে কবিতার জৌলুস বাড়ে।অাপনি কি মনে করেন?এতে কি কবিতা ভারী হয়ে ওঠে?কবিতা কি সহজবোধ্য হওয়া উচিত?অাপনার মতামত ব্যক্ত করুন।
উত্তর ৫
-------------
শব্দ হলো পথ,ছন্দ হলো গতি,বিরামচিহ্ন হলো বিশ্রাম।কঠিন শব্দ প্রয়োগে কবিতার জৌলুস কখনোই বাড়েনা।তবে কিছু কবিতা অাছে যেসব কবিতায় কঠিন শব্দ প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে।বিষয়টি অালোচনা-সাপেক্ষ।কবিতা হবে সহজ, কিন্তু অাধো অাধো রহস্যময়।পাঠক পালাতে চাইবে কিন্তু পারবেনা... অজানা টানে বারবার ফিরে অাসবে....রক্তে তুলবে ঘূর্ণিনাচ,পাঠক অাবেশিত হবে।ছন্দ ও সুরের তাল শিরায় শিরায় অনুভব করবে।
প্রশ্ন ৬
আপনি কাউকে কবিতা লেখার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন? আপনার প্রেরণায় কি
কখনো কেউ এই সাইটে এসেছেন? আপনি কিভাবে অন্যের থেকে অনুপ্রেরণ আশা করেন?
উত্তর ৬
------------
হা করেছি,তবে অাজকাল কবিতার ব্যাপারে বাস্তবজগৎে অনেকের অাগ্রহ কম।হ্যা, এসেছে।তবে মাত্র একজন।মাত্রই নতুন এসেছে। অামার খুব ভালো বন্ধু।তাঁর নাম ---"অনিলা কনক"।
কবিতার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।অামিও অনুপ্রেরণা অাশা করি সবার কাছ থেকে।তবে অামি সমালোচনা বেশি পছন্দ করি।যখন অামার কবিতার কেউ সমালোচনা করে তখন অামার অাত্মা শান্তি পায়।সমালোচনাকেই অামি অনুপ্রেরণা মনে করি।এগিয়ে যাওয়ার শক্তি মনে করি।অামি মাত্র দু'বছর ধরে লেখা-লেখি করছি।তাই এখনো বেশ দুর্বলতা অাছে।অামি অন্তর হতে কামনা করি অাসরের শ্রদ্ধেয় কবিগণ অামার পাশে থাকবেন।তবে যে মানুষটির কথা একেবারে না বললেই নয়,তিনি "প ট ল দা"।অামাকে তিনি ছায়ার মত অাশ্রয় দিয়ে অামার ভেতরের কবিসত্তাকে জাগ্রত করেছেন।অাপনারা এই মানুষটির জন্য একটু প্রার্থনা করবেন।
প্রশ্ন ৭
আপনার কাছে কোনটি লেখা সহজ কবিতা না গল্প বা উপন্যাস? কবিতা লিখতে
লিখতে আপনার কখনো কি মনে হয়েছে এর থেকে গল্প লেখা অনেক সহজ? কিম্বা কবিতা
লিখতে লিখতে কোন গল্পের জন্ম হয়েছে কি?
উত্তর ৭ঃ
-----------
কবিতা লিখতে গিয়ে অামার কখনো গল্পের জন্ম হয়নি।অামার দৃষ্টিতে পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে রহস্যময় হলো কবিতার জগৎ।ব্যাক্তিগতভাবে অামার মনে হয় কবিতার চেয়ে গল্প বা উপন্যাস লেখাটাই সহজ।যেহেতু গল্প কিংবা উপন্যাস বিষয়ে অামার অভিজ্ঞতা নেই পরিপূর্ণরূপে তাই বলাটা কঠিন।তবে কবিতা যেমন সহজ,ঠিক তেমনি কঠিন অাবার রহস্যময়..........
প্রশ্ন ৮
কবি হিসাবে পাঠকের মন জয় করার সহজ উপায় কি? আপনার মতামত? কবি না
গল্পকার সহজেই পাঠকের মন জয় করেন? আপনার মতামত?
উত্তর ৮ঃ
------------
পাঠকের মন জয় করার সহজ উপায় অামার জানা নেই।অামি নিজের অানন্দেই লিখি।অামার মনে হয় কোন কবি শুধু পাঠকের মন জয় করার উদ্দেশ্যে লেখা-লেখি করেন না।তবে হা,কবিতা লেখার সময় পাঠকের কথাও বিবেচনা করা উচিত কারণ পাঠক ব্যতীত কবির কোন মূল্য নেই।এমন কিছু লেখা উচিত নয় যা পড়লে সরলমনা পাঠকগণ বিভ্রান্তিতে পড়েন।
গল্পকার এবং কবি ---দু'টো ভিন্ন প্লট।পাঠকের অন্তর্গত মানসিকতার উপর নির্ভর করে মন জয় করার উপাদান।তবে অামার কাছে মনে হয় কবিতাই পাঠককে ছুঁয়ে যায় বেশি।মানব মস্তিষ্ক কবিতার চিত্রপটকে ধারণ করে বেশি।কারণ কবিতায় সুর ও ছন্দের তাল এমন একটি অাবহ সৃষ্টি করে যা পাঠকের মনে দোলা দিয়ে যায় সহজেই..........
প্রশ্ন ৯
বর্তমানে এই অত্যাধুনিক স্মার্ট যুগে সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশের ক্ষেত্রে
অন লাইন বিভিন্ন ব্লগ বা সাইটের ভূমিকা সম্পর্কে আপনার মতামত যদি আমাদের
পাঠক কূল কে জানান তো খুব ভালো লাগে।
উত্তর ৯:
-------------
অামি মনে করি --সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশের ক্ষেত্রে সাহিত্যের বিভিন্ন ব্লগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।অার এ বাংলা কবিতার অাসর কবি তৈরির কারখানা।এখানে সৃজনশীল সত্তা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর দারুণ সুযোগ অাছে।
প্রশ্ন ১০:
বর্তমানে প্রতিদিন নতুন নতুন কবি এই আসরে আসছেন ঠিকই তবে অনেক কবিই
কিছুদিন লেখার পরেই এই আসরে তেমন আসছেন না বা আসলেও কবিতা পোস্ট করছেন
না। এর কারন হিসাবে আপনি কি মনে করেন?
উত্তর ১০:
------------
এটির জন্য অামার মনে হয়----কবিদের বাস্তব জগৎের ব্যস্ততা,অাসরে নতুন অাসার পর অন্য কবিদের সাথে সংযোগ-সূত্র তৈরি না করা,বিতর্কে জড়িয়ে পড়া,অভিমান, ইত্যাদি ইত্যাদি হতে পারে........
প্রশ্ন১১
যারা এই আসর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তাদের ইউদ্দেশ্যে আপনি কি বলবেন?
উত্তর ১১:
-------------
অাসর একেবারে ত্যাগ করা খুবই দুঃখজনক।এ বাংলা কবিতার অাসর মেধা ও সৃজনশীল বিকাশের অন্যতম জায়গা।তাই অামি বলবো অাসর ত্যাগ করা কোন সমাধান হতে পারে না।সৌখিন কবিরা এখানে নিজেকে কবি হিসেবে তৈরি করতে পারেন।অামি মনে প্রাণে চাই যারা চলে গিয়েছেন তারা ফিরে এসে অাসরকে সৃষ্টিশীল উপহার দিয়ে ভরিয়ে তুলবেন।
প্রশ্ন ১২:
এই সাইটকে আপনি অন্য সাইটের তুলনাই কতখানি উতকৃষ্ট মনে করেন? কেন?
সাইটের উন্নতিকল্পে এডমিনের ভূমিকা নিয়ে কিছু বলুন?
উত্তর ১২
------------
অামি ব্যক্তিগত ভাবে অন্য সাইটের চেয়ে বাংলা কবিতার অাসরকে উৎকৃষ্ট মনে করি।বাংলা কবিতার অাসর কবিতা প্রকাশের একটি উপযোগী মাধ্যম,এ অনলাইন জগৎে।কারণ এখানে এক কবির সাথে অন্য কবির অান্তরিকতা চোখে পড়ার মত।অন্যান্য সাইটে তা বিরল।অার মাননীয় এডমিন কে অামি শ্রদ্ধা জানাই।অাসরের উন্নতিকল্পে তিনি সদা সতর্ক।অামি উনাকে কাব্যপ্রেমী মানুষ হিসেবে দেখেছি।যেকোন সমস্যায় তিনি অামাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।অামি তার প্রতি কৃতঞ্জ।
তাহলে বন্ধুরা আজ এই পর্যন্ত। এবার আপনারা আমাদের অতিথি কবিকে প্রশ্ন করুন আর জেনে নিন আপন করে আপনার প্রিয় কবিকে।